বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষে আহত আরেক শ্রমিকের মৃত্যু

লাশের প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে গুলিতে আহত আরেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম শিমুল আহমেদ (২২)। বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।


আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিমুলের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে বিক্ষোভে সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৬-এ।


বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল হক ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, আহত শ্রমিকদের মধ্যে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।


গত শনিবার সকালে বাঁশখালীর গন্ডামারায় সংঘর্ষের সময় গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন ৩ পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন। ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা করা, শুক্রবার ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা করাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন কিছু শ্রমিক। তখনই পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে। সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।


এদিকে গুলিতে আহত অন্তত ১২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শ্রমিকেরা হলেন আমিনুল ইসলাম (২৫), মো. আমির (২৪), মো. দিদার (২১), মো. বিল্লাল (২৬), মো. আযাদ (১৮), মো. কামরুল (২৬), শাকিল (২৩), মুরাদ (২৫), মিজান (১৮), রাহাত (২৮), হাবিবুল্লাহ (১৮), হাসান (৪০) ও অভি (২০)।

আরও পড়ুন


ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেককে ৩ লাখ এবং আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয় এস আলম কর্তৃপক্ষ।


বাঁশখালী সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিকানায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো থ্রি পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এখানে অর্থায়ন করেছে। এখানে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।


তিন দিন কাজ বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেছে বলে জানান এস আলম গ্রুপের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মোস্তান বিল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত দেড় হাজার শ্রমিক কাজে যোগদান করেছেন। বাকিরাও যোগ দেবেন।