আয়ে যাত্রা শুরু পদ্মা সেতুর

ছবি: দীপু মালাকার

১৬৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুতে ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে নিজের গাড়ির জন্য ৭৫০ টাকা টোল দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে ১৮ টি গাড়ি ছিল। আজ শনিবার দুপুর ১২টার একটু আগে মাওয়ায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে জাজিরা প্রান্তে যান।

টোল দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
ছবি: বাসস

পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বাধা দিয়েছেন, তারা উপযুক্ত জবাব পেয়েছেন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বাধা দিয়েছেন, তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে। এ সেতুর ফলে ২১ জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে।

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। আপনাদের পাশেই আমি আছি, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি যেকোনও ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত, এই ওয়াদা আমি দিয়ে গেলাম।’

আবদুল আলীমের গানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত ও জাজিরার নাওডোবা প্রান্তের উদ্বোধন কার্যক্রম শেষে কাঠালবাড়ির জনসভাস্থলে পৌছান। এরপর মঞ্চে বাজানো হয় বাংলাদেশের লোকগানের উজ্জ্বল নক্ষত্র শিল্পী আবদুল আলীমের ‘সর্বনাশা পদ্মা নদীরে’ গানটি। এর পর বাজানো হয় ‘ও নদীরে একটি কথা সুধাই শুধু তোমারে’ গানটি। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জয়বাংলা স্লোগানে জনসভাস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু অতিক্রম করেন তখন বিমান বাহীনির ছয়টি হেলিকপ্টার তাকে অভিবাদন জানায়। এর পর ওই হেলিকপ্টারগুলো কাঠালবাড়ি ঘাটে জনসভা মঞ্চের ওপর দিয়ে চক্কর দেয়। এর একটিতে জাতীয় পতাকা, একটিতে বঙ্গবন্ধু, একটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পদ্মা সেতু, আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা বহন করছিল। আরেকটি হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছিটিয়ে জনসভায় আসা মানুষদের অভিবাদন জানানো হচ্ছিল।

প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে সেতুতে পার হলেন শেখ হাসিনা

প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সেতুর মাওয়া প্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে টোল প্লাজায় যান প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখানে তিনি নিজ হাতে টোল প্রদান শেষে গাড়ি বহর নিয়ে সেতু দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন।

সেতুতে নামলেন প্রধানমন্ত্রী, এরপর পাড়ি দিলেন সেতু

দুপুর ১২টার দিকে মাওয়া প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেন।

উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। জাজিরার দিকে যাওয়ার পথে দুপুর ১২টা ১২ মিনিটের দিকে গাড়ি থামিয়ে নেমে যান প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতুতে দাঁড়িয়ে তিনি বিমান বাহিনীর মহড়া দেখেন। এরপর ১২ টা ২৬ মিনিটের দিকে তিনি আবার গাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে তিনি জাজিরা প্রান্তে পৌছান।

জাজিরা প্রান্তেও দুপুর ১২ টা ৩৮ মিনিটের দিকে ফলক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সেখানে মোনাজাত হয়।

মাওয়া প্রান্তে টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন। এর আগে ১১টা ৪৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে টোল দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও অতিথিদের গাড়ি সেতু পাড়ি দেয়। আগামীকাল রোববার ভোর থেকে টোল দিয়ে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু করবে সেতু দিয়ে।

ছবি: বাসস থেকে নেওয়া

মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেন।

উদ্বোধনের তিনি মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বিকেলে হেলিকপ্টারে জাজিরা পয়েন্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মান কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অংশ দৃশ্যমান হয়। পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে বহুমুখী ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

ডাকটিকিট উন্মোচন, প্রধানমন্ত্রী পেলেন পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকেট, সুভ্যেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও সিল মোহর এবং ১০০ টাকা মূল্যের স্মারক নোট অবমুক্ত করেন।
পদ্মা সেতুর নির্মাণকারী কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে একটি পদ্মা সেতুর একটি রেপ্লিকাও উপহার দেওয়া হয়। নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ছবি তোলেন তিনি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ১.২ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সেতু কেবল সেতু নয়। এর ৪২টি স্তম্ভ স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

আমরা মাথা নোয়াইনি, মাথা নোয়াব না: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারও বিরুদ্ধে আমার কোনো অনুযোগ নেই। আমরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা করে যাচ্ছি।

বক্তব্যে আবেগাপ্লুত দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি সেতু নির্মাণে সাহস জোগানো বাংলাদেশের জনগণকে স্যালুট জানিয়েছেন।

বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তে
ছবি: দীপু মালাকার

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ‘জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শিখান নাই।’

বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তে
ছবি: দীপু মালাকার

এটি শুধু কংক্রিটের সেতু নয়, সম্মান আর সক্ষমতার প্রতীক: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে আর কিছুক্ষণ পরেই। বহু কাঙ্ক্ষিত সেই সেতুর উদ্বোধন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তে আগেই পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি দেশবাসীকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়েছেন তিনি। তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণে জড়িতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের কারণে সেতু নির্মাণে বেগ পেতে হয়েছে। তবে থেমে যায়নি। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নি।

১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের গল্প তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি শুধু ইট, রড, সিমেন্ট ও কংক্রিটের সেতু নয়, বাংলাদেশের সম্মান আর সক্ষমতার প্রতীক। এই সেতু নির্মাণ ঠেকাতে ষড়যন্ত্র হলো।’

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। টাকা ছাড় না হতেই দুর্নীতির কথা বলা হলো। মামলা হলো। সব কিছু পেরিয়ে আমরা আজ এ সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।

উদ্বোধন ঘোষণার অপেক্ষায় লাখো মানুষ

দক্ষিনের লাখো মানুষ অপেক্ষায় আছেন প্রধানমন্ত্রী কখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেবেন আর তাদের কাছে আসবেন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কালের স্বাক্ষী হতে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষন শুনতে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে জাজিরার নাওডোবা ও শিবচরের কাঠালবাড়িতে মানুষ আসতে শুরু করেছেন। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা ছাড়াও চাঁদপুর, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ থেকে মানুষ এসেছেন। সকাল ৮টার মধ্যে জাজিরা ও শিবচরের অন্তত চারটি ইউনিয়নের সড়ক লোকে-লোকারন্য হয়ে যায়। গ্রামের বিভিন্ন সড়ক ধরে মানুষ সমাবেশ স্থলে আসতে থাকেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষে পদ্মার তীরের ৬ কিলোমিটার এলাকা ভরে যায়।

সমাবেশ মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী
ছবি: দীপু মালাকার

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে আর কিছুক্ষণ বাদেই। বহুকাঙ্ক্ষিত সেই সেতুর উদ্বোধন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে প্রথম সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন। মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে ভাষণ শেষে তিনি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। অমনি খুলে যাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার।

আরও পড়ুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। সেতুর উদ্বোধন ঘিরে শেখ হাসিনা ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য প্রস্তুত মাওয়া প্রান্ত। দলের শীর্ষ নেতারা মাওয়ায় পৌঁছেছেন।

এরই মধ্যে পৌঁছেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুসহ আরও অনেকে।

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররাও সুধী সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ে কাঁঠালবাড়ি এলাকায়।

আরও পড়ুন

দলে দলে জনসভাস্থলে আসছে মানুষ

ভোর আলো ফুটতে না ফুটতেই সাধারণ মানুষের পদচারণে মুখোর হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল। বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল—যে যেভাবে পারছে দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন। অনেকেই হেঁটে রঙবেরঙের পোশাকে সাজেগুজে আসছেন সভাস্থলে।

এদিকে ভোর থেকে গণমানুষের চাপ থাকায় ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

আমরা এক গ্রামের ৫০ জন একটি বাস নিয়ে এখানে আইছি। রাস্তায় জ্যাম থাকায় হেঁটে সভায় যাইতাছি। একটু কষ্ট হইলেও আনন্দ লাগতাছে। এত মানুষ দেখে ভালো লাগছে। তা ছাড়া আজকের পর থিকা আমাগো এহন আর ফেরির জন্য এ ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইসা থাকার লাগবো না। এর থেকে আনন্দের আর কী আছে কন?
ইকবার হোসেন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির পরিবহন শ্রমিক
সমাবেশস্থলের দিকে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। নাওডোবা ইউনিয়ন, জাজিরা, শরীয়তপুর
ছবি: আরিফুর রহমান

প্রথম আলোর প্রতিনিধি অজয় কুন্ডু জানাচ্ছেন, সকাল থেকে সড়ক ও নৌপথ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ দলে দলে আসছেন সভাস্থলে। যানবাহনের চাপ থাকায় অনেকেই হেঁটে যাচ্ছে। আশেপাশের এলাকা থেকে শোভাযাত্রা বের করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা ব্যানার ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছেন। সভাস্থলে সাধারণ মানুষের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। মানুষের ভিড় বাড়তে থাকায় পুরো বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় এক আনন্দ উৎসব শুরু হয়েছে।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে এসেছেন পরিবহনশ্রমিক ইকবার হোসেন।জনসভাস্থলে যাওয়ার পথে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক গ্রামের ৫০ জন একটি বাস নিয়ে এখানে আইছি। রাস্তায় জ্যাম থাকায় পায়ে হেঁটে সভায় যাইতাছি। একটু কষ্ট হইলেও আনন্দ লাগতাছে। এত মানুষ দেখে ভালো লাগছে। তা ছাড়া আজকের পর থিকা আমাগো এহন আর ফেরির জন্য এ ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইসা থাকার লাগব না। এর থেকে আনন্দের আর কী আছে কন?’

বাংলাবাজার ঘাটের সংযোগ সড়কে বসে কথা হচ্ছিল ইজিবাইকচালক হিরণ শেখের সঙ্গে। হিরণ খুলনার দিঘলিয়া থানার মহিষদিয়া এলাকা থেকে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে আরও প্রায় ৯০ জন। সবাই একই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হিরণরা দুটি বাস নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে। সকাল সকাল চলে আসার কারণ জানতে চাইলে হিরণ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আনন্দ করতে করতে আসছি। সকাল সকাল না এলে ভিড়ের মধ্যে পড়তে হতো। তা ছাড়া জনসভায় সামনের দিকে বসার জন্য আমরা আগেভাবে চলে আসছি।’

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বিভিন্ন রঙের টি–শার্ট পরে সেতুর দুই পারের সমাবেশস্থলে আসছেন মানুষ। সেতুটি উদ্বোধনের ক্ষণটি স্মরণীয় করে রাখতে দুই পাড় সাজানো হয়েছে। আলোকসজ্জিত করা হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভবন। সকালে সেতুর ফিতা কাটার দৃশ্য দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দেশের মানুষ।

সাদা টি–শার্ট পরে তাঁরা এসেছেন সাতক্ষীরা থেকে
ছবি: প্রথম আলো

দেশের সড়ক যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে আজ। উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, যা দেশীয় অর্থায়নে বড় অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশের সক্ষমতাও প্রকাশ করবে।

বিভিন্ন রঙের টি–শার্ট পরে বিভিন্ন জেলা থেকে সমাবেশস্থলে আসছেন মানুষ
ছবি: প্রথম আলো

আজ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর শুধু প্রধানমন্ত্রী ও অতিথিদের গাড়ি সেতু পাড়ি দেবে। আগামীকাল রোববার ভোর থেকে টোল দিয়ে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু করবে সেতু দিয়ে।