তদন্তের কাজটি দুরূহ ও চ্যালেঞ্জিং: ফরাসউদ্দিন

মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন

রিজার্ভের অর্থ চুরির তদন্তকাজকে ‘দুরূহ ও চ্যালেঞ্জিং’ বলে জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তবে দেশের স্বার্থে এই চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করেছেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফরাসউদ্দিন এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রীর বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ১৫ মার্চ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে এ কমিটির তদন্ত কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়।
বৈঠকে কমিটির সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং সদস্যসচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুলচাঁদ দাস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষ করে চলে যাওয়ার সময় সাংবাদিকেরা ফরাসউদ্দিনের কাছে জানতে চান—রিজার্ভ চুরি ও এর তদন্তকাজটিকে তিনি কীভাবে দেখছেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটা বড় কাজ। দেশের জন্য কাজ। তদন্তের কাজটি দুরূহ ও চ্যালেঞ্জিং। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে আজকে (গতকাল) মাত্র সূচনা করলাম।’
তদন্তের স্বার্থে আগামী ৩০ দিন এ ব্যাপারে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, কমিটির কর্মপরিধি (টিওআর) অনুযায়ী কাজ করা হবে এবং এ ব্যাপারে কোনো কথা বলা যাবে না। বললে তদন্ত ব্যাহত হবে।
তদন্তে আরও লোক নিয়োগ করা হবে কি না জানতে চাইলে ফরাসউদ্দিন বলেন, আপাতত তিনি লোক নিয়োগের দরকার পড়বে বলে মনে করছেন না।
তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা ফিলিপাইনে যেতে হবে কি না প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিছুই চিন্তা করিনি। মাত্র ২০ মিনিটের বৈঠক করলাম। অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছি যে আমরা কাজটি করতে পারব।’
অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোনো জায়গায় বসে কমিটি অফিস চালাবে বলেও জানান ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এটি হবে চলমান অফিস।’
তদন্তের প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না বা বলবেন কি না জানতে চাইলে ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘কোনো কথাই বলা যাবে না। তদন্তের প্রয়োজনে আমার এখন চুপচাপ থাকতে হবে।’
কর্মপরিধিতে কমিটিকে এক মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন এবং ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কর্মপরিধির মধ্যে আরও রয়েছে, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে এই অর্থ কীভাবে ও কার বরাবর গেল, অবৈধ পরিশোধ ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কী পদক্ষেপ নিয়েছে, বিষয়টি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রাখার যৌক্তিকতা কী, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা কতটুকু এবং একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে করণীয় কী ইত্যাদি।
ফরাসউদ্দিন বলেন, তিনি অন্তত ৩০ দিন (অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন তৈরিকালীন) কোনো কথা বলবেন না।