৫ টাকা এখন সরকারি মুদ্রা

৫ টাকা এত দিন ব্যাংক নোট বা মুদ্রা থাকলেও এখন থেকে সরকারি মুদ্রা। গত রোববার বাংলাদেশ কয়েনেজ আইন সংশোধন করে ৫ টাকাকে সরকারি মুদ্রা করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, ‘প্রচলিত ১ ও ২ টাকা মূল্যমানের কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রার পাশাপাশি ৫ টাকা মূল্যমানের নোট এবং ধাতব মুদ্রাও সরকারি মুদ্রা হিসেবে গণ্য হবে’।
অর্থ মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বর্তমানে প্রচলিত ১, ২ ও ৫ টাকা মূল্যমানের কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা নতুন ৫ টাকার নোট ও ধাতব মুদ্রার পাশাপাশি চলমান থাকবে।
আইন সংশোধনের ফলে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট এখন ব্যাংক নোট। আর সরকারি নোট হচ্ছে ১, ২ ও ৫ টাকা।
ব্যাংক নোট বের করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সই থাকে। আর সরকারি নোট বের করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে থাকে অর্থসচিবের সই।
গত ১৮ জানুয়ারি সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘৫ টাকা মূল্যমান পর্যন্ত নোট ও ধাতব মুদ্রাকে সরকারি মুদ্রায় রূপান্তর’ শীর্ষক এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রথম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ৫ টাকাকে সর্বনিম্ন সরকারি নোট করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে অর্থমন্ত্রী পরদিন ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, প্রচলিত সব নোটই চালু থাকবে। সময়ের পরিবর্তনে কিছু মুদ্রা বাজারে অচল হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মানুষের লেনদেনের জন্য দেশে বর্তমানে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যমানের নোট ও ধাতব মুদ্রা প্রচলিত রয়েছে। অচল ১ পয়সার ধাতব মুদ্রা থেকে ১ হাজার টাকার নোট পর্যন্ত দেশে প্রচলিত সব মুদ্রার সম্মিলিত মূল্যমানই হলো এই ৯৫ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছর ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংক নোট ও সরকারি নোটের একটি তুলনামূলক বিবরণী পাঠায়। এতে বলা হয়, বাজারে প্রচলিত মোট মুদ্রার মধ্যে ব্যাংক নোট হচ্ছে ৯৯ দশমিক ১৭ শতাংশ আর সরকারি নোট শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ।
১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে দেশে মোট মুদ্রার মধ্যে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ সরকারি মুদ্রা থাকলেও এরপর থেকে প্রতিবছরই সরকারি মুদ্রার অংশ কমতে থাকে।
৫ টাকাকে সরকারি মুদ্রা করার জন্য যুক্তি হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের আর্থিক খাত ৪০ বছর আগের তুলনায় অনেক গভীর হয়েছে। অর্থনীতির সম্প্রসারণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেনদেনের জন্য প্রচলিত অর্থের পরিমাণও (কারেন্সি ইন সার্কুলেশন) বেড়েছে। কিন্তু ব্যাংক মুদ্রা যে হারে বেড়েছে, সরকারি মুদ্রা সে হারে বাড়েনি।