দু-একটা দোকান খুলেছে, ইলিশের দাম বেশি নিচ্ছে

ইলিশ মাছফাইল ছবি: প্রথম আলো

পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপনে পান্তা আর নানা পদের ভর্তার সঙ্গে অনেকেরই খাবারের তালিকায় ইলিশও থাকে। পান্তা আর ইলিশ না হলে যেন অনেক বাঙালির বর্ষবরণই জমে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূল্যস্ফীতির চাপে অবশ্য পয়লা বৈশাখে ইলিশ নিয়ে মাতামাতি কিছুটা কমেছে। কারণ, বছরের এই সময়ে বাজারে ইলিশের দাম বেশ চড়া থাকে।

জাতীয় মাছ ইলিশের চড়া দামের সঙ্গে এবার আরেক চিন্তা যুক্ত হয়েছে। সেটি হলো ঈদের ছুটিতে অফিস-আদালত থেকে শুরু করে বাজারঘাট সবই এখন প্রায় বন্ধ। বিশেষ করে ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোয় এখনো দোকানপাট সেভাবে খোলেনি। তবে আজ থেকে কিছু কিছু দোকান খুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আগামীকাল পয়লা বৈশাখ, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ শুরু। এ উপলক্ষে যাঁরা ঈদের আগে ইলিশ কিনে রাখেননি, তাঁদের আজ ইলিশ কিনতে গেলে মোটামুটি ভালো অর্থই খরচ করতে হবে। কারণ, একে তো ইলিশের দাম বেশি, এর ওপর বাজারে মাছের সরবরাহ কম এবং বাজারে দোকান খুলছে মাত্র গুটিকয়। তারা আবার রীতিমতো সিন্ডিকেট করে বসে আছে। পয়লা বৈশাখে ইলিশ খেতে চাইলে আপনাকে আজ চড়া দামেই তা কিনতে হবে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া গেছে। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের নিয়মিত যে মাছের বাজার, সেটা গতকাল রাত পর্যন্ত বন্ধ ছিল। সেখানে কোনো মাছের দোকান খোলেনি। কিচেন মার্কেটের মাছের দোকানগুলো অবশ্য আজ সকাল থেকে খুলবে বলে সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা জানান। তবে কারওয়ান বাজার রেললাইনের পাশে মাছের যে আড়ত রয়েছে, সেখানে গিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় মাত্র দুটি দোকান খোলা পাওয়া গেছে। দুই দোকানের একটিতে শুধু ইলিশ মাছ নিয়ে বসেছিলেন একজন বিক্রেতা। আরেক দোকানে ইলিশের সঙ্গে শুধু চিংড়ি ও পোয়া মাছ দেখা গেছে। সব মাছের দামই ছিল চড়া।

কারওয়ান বাজারের এই আড়তে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৪০০ টাকা। আর ৭০০ গ্রামের ইলিশের প্রতি কেজির দাম চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকা। ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। বাজারে ইলিশ কম থাকায় বিক্রেতারা দাম কমাচ্ছেন না। খুব জোরাজুরি করলে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকার মতো কম রাখেন, এই যা।

বাংলামোটর এলাকার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম কারওয়ান বাজার থেকে ইলিশ কিনে ফেরার সময় প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাম খুব বেশি। আম্মা না বললে এবার ইলিশ কিনতামই না।’

কারওয়ান বাজার মাছের আড়তের পাইকারি বিক্রেতা মো. রিপন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাছ আসছে কম। যা আসছে, তারও দাম বেশি। আমাদের কিছু করার নেই। পয়লা বৈশাখের আগে প্রতিবারই দাম একটু বাড়ে।’

কারওয়ান বাজারে এলে তা-ও ইলিশ মাছ পাবেন, এই নিশ্চয়তা আছে। কিন্তু ঢাকার অনেক বাজারেই বিক্রেতারা এখনো ঈদের ছুটি শেষে ফেরেননি। তাতে অধিকাংশ মাছের বাজার বন্ধ পেতে পারেন। যেমন রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা আবদুস সালাম মুঠোফোনে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। আমার ঢাকায় ফিরতে আরও দুই-তিন দিন লাগবে। এরপর দোকান খুলব। ঈদের ছুটির কারণে এবার বৈশাখ উপলক্ষে ব্যবসা করছি না।’