বড় ব্যবসায়ীদের কারণে একচেটিয়া বাজারব্যবস্থা

কথোপকথনে স্বাধীনতার পর শিল্পকারখানা জাতীয়করণ, বেসরকারীকরণের চ্যালেঞ্জ, পাকিস্তান আমলের আমলাতন্ত্র ইত্যাদি বিষয় উঠে আসে।

লিট ফেস্টে ‘ডন টু ডার্কনেস’: রেহমান সোবহানের সঙ্গে সৈয়দ আকতার মাহমুদের কথোপকথন। গতকাল বাংলা একাডেমিতে
ছবি: দীপু মালাকার

বড় ব্যবসায়ীদের কারণে একচেটিয়া বাজারব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। দেশের বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকেরা জাতীয় সংসদে বসেন। এমনকি তাঁদের অনেকে মন্ত্রিসভার সদস্যও। এতে সহজেই অনুমেয়, বাজার নিয়ে কী ধরনের সিদ্ধান্ত হয়। সহজেই তাঁদের ক্ষমতা কমানো যাবে না। এটা নিছক অর্থনৈতিক নীতির বিষয় নয়; রাজনৈতিক অর্থনীতির বিষয়।

 গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় শুরু লিট ফেস্টের একটি অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান এমনই মত দিলেন।

লিট ফেস্টের ওই অধিবেশনে উপস্থিত শিক্ষার্থীর প্রশ্নটা ছিল এ রকম—বাংলাদেশে এখন একচেটিয়া বাজারব্যবস্থা বিরাজমান। দেশে নীতি গ্রহণ ব্যবস্থায় পঙ্গুত্ব আছে। এতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বাজার থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

আরও পড়ুন

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গতকাল থেকে চার দিনব্যাপী লিট ফেস্ট শুরু হয়েছে। আগামী রোববার পর্যন্ত চলবে এই সাহিত্য উৎসব। গতকাল একটি অধিবেশনে রেহমান সোবহানের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ড ফ্রম ডন টু ডার্কনেস-এর আলোকে কথোপকথন হয়। অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন অর্থনীতিবিদ সৈয়দ আখতার মাহমুদ।

রেহমান সোবহানের কথোপকথনে স্বাধীনতার পর শিল্পকারখানা জাতীয়করণ, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকাণ্ড, বেসরকারীকরণের চ্যালেঞ্জ, ব্যবসায়িক নীতি গ্রহণ, পাকিস্তান আমলের আমলাতন্ত্র—এমন নানা বিষয় উঠে আসে।

স্বাধীনতার পর শিল্পকারখানা জাতীয়করণ নিয়ে কথা বলেন রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ষাটের দশক থেকেই এ দেশে ব্যাংক-বিমা ও শিল্পকারখানা গড়ে ওঠে। ১৯৭১ সালের পর সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে যেসব ব্যাংক-বিমা, শিল্পকারখানা পাওয়া গেছে, সেগুলোর প্রায় শতভাগের মালিক ছিলেন পাকিস্তানিরা। তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠান ফেলে রেখে যান।

তখন বড় শিল্পঋণও পাকিস্তানিরাই নিয়েছিলেন। তখন এসব প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো দক্ষ মানবসম্পদ এ দেশে ছিল না। তাই স্বাধীনতার পর সরকার শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তা ছাড়া বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে ব্যবসা করার ইতিহাস তেমন ছিল না। শুধু চট্টগ্রামের এ কে খান পরিবার তখন বড় ব্যবসায় ছিল। সেই বিখ্যাত ২২ পরিবারের একটি পরিবার ছিল চট্টগ্রামের খান পরিবার।

আরও পড়ুন

রেহমান সোবহানের কথোপকথনে উঠে আসে বেসরকারীকরণ প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল অনেকটাই সমতামুখী। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তখন উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে তোলা হবে—এমন কোনো ভাবনাই ছিল না। এ সিদ্ধান্ত নিতে নিতে তিন দশক পেরিয়ে যায়। এই দেশে বেসরকারি উদ্যোক্তা তৈরির মনোভাব গড়ে ওঠে স্বাধীনতার পর।

কিন্তু বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান ও এরশাদ আমলেও ভালোভাবে বেসরকারীকরণ সম্ভব হয়নি। মূলত সামরিক সরকারের আমলেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাঁর আক্ষেপ, এর জন্য বোধ হয় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করা দরকার ছিল। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়, আরও অনেক দেশেই সামরিক শাসকদের এভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একধরনের উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরি করতে দেখা যায়।

স্বাধীনতার আগে পূর্ব পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (ইপিআইডিসি) আওতায় উৎপাদন খাতের ৩৭ শতাংশ শিল্পকারখানা ছিল।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে সৈয়দ আখতার মাহমুদ বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদকে তাঁর বই নিয়ে প্রশ্ন করেন। তাঁর প্রশ্নটি ছিল এমন, ‘আপনি বইয়ের এক জায়গায় লিখেছেন, শিল্পকারখানা জাতীয়করণের পরিণতি কী হবে, সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর মনে কিছুটা সন্দেহ ছিল, কেন?’

জবাব দিতে গিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুর মনে কিছুটা দ্বিধা ছিল। এই উদ্যোক্তা শ্রেণি আইয়ুব ও মোনায়েম খান জমানার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠলেও ১৯৬৯ সালের পর তাঁরা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছেন। ফলে ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এবং এরপরের বঙ্গবন্ধুর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য আছে। তবে জাতীয়করণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনিই নিয়েছেন। একা নেননি, রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন রেহমান সোবহান। তখনকার পরিকল্পনা কমিশনের কাজের পরিধি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সহায়তা করেছেন। তিনি ব্যাংক-বিমা ও অর্থ মন্ত্রণালয় নিয়ে বেশি কাজ করতেন। আমরা পরিকল্পনা কমিশন নিয়ে বেশি কাজ করতাম। আমাদের কাজে যথেষ্ট স্বাধীনতা ছিল। আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এসব বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতাম।’

রেহমান সোবহান বলেন, ‘তৎকালীন পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূরুল ইসলাম যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন। কাজের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক জটিলতা ছিল না। তাই আমরা ক্ষমতাহীন ছিলাম না।’

সিপিডির চেয়ারম্যান বলেন, ‘তখন বাজেটের সিংহভাগ আসত বিদেশি সহায়তা থেকে। বাজেট, পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়ন-সহযোগীদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করতাম—এই দায়িত্ব পরিকল্পনা কমিশনের হাতেই ছিল। একই সঙ্গে আমরা দাতাদের প্রভাবমুক্তভাবে নীতি প্রণয়নের চেষ্টা করেছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করেছি। এটা আমাদের বড় ধরনের সাফল্য বলেই মনে করি। বিশেষত, তখন আমরা যেভাবে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলাম, তার পরিপ্রেক্ষিতে এটি বলা যায়।’ তিনি বলেন, ‘এই ক্ষমতা আমাদের ছিল এবং একই সঙ্গে, দাতাদের দেওয়া অর্থ বিতরণেও আমরা ভূমিকা রেখেছি। তবে সহায়তার অর্থ বিতরণে আমরা তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি। এরপর কিন্তু আমরা দেখেছি, উন্নয়ন-সহযোগীরা কীভাবে নীতি প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করেছে।’

রাজনীতিবিদের চেয়ে এখন আমলারা বেশি প্রভাবশালী বলে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সঞ্চালক সৈয়দ আখতার মাহমুদ। তাঁর কথার রেশ ধরে রেহমান সোবহান বলেন, এ বিষয়ে রাজনীতিবিদ এমনকি মন্ত্রীরাও অনেক সময় অভিযোগ করেন। এখন আমলারা অনেক বেশি ক্ষমতাশালী। এটাকে তিনি ‘আইয়ুবিয়ান মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। বলেন, ষাটের দশকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন আমলারা। তখন তাঁদের নাম মুখে নেওয়াও কঠিন বিষয় ছিল। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সচিব তখন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। পুরো ব্যবস্থাই তখন এভাবে পরিচালিত হতো—সব সিদ্ধান্ত ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হতো।

রেহমান সোবহান বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল চেতনাগুলোর অন্যতম একটি ছিল, আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বেরিয়ে আসা। পাকিস্তানের ২৪ বছর যাঁরা মাঠে–ঘাটে আন্দোলন করেছেন, তাঁরা স্বাধীনতার পর মন্ত্রী হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা মনে করছেন, স্বাধীন দেশের নীতি প্রণয়নে তাঁদের ভূমিকা থাকবে। মানুষেরও সে রকম প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তখন দেশের সম্পদের ঘাটতি ছিল। কোথায় কোন প্রকল্পে কখন বিনিয়োগ করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া দুরূহ ছিল। একধরনের প্রতিযোগিতা জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ছিল।

রেহমান সোবহান বলেন, ‘অন্যদিকে আমলারা মনে করতেন, পাকিস্তান আমলে আমলাদের যে দৌরাত্ম্য তাঁরা দেখেছেন, এবার তাঁদের তা দেখানোর সময় এসেছে। আগে তাঁরা সুযোগ পাননি, ছোট পদে ছিলেন, এবার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁরা মার্সিডিজ গাড়ি হাঁকাবেন, সব সিদ্ধান্ত নেবেন। সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সচিবদের চেয়ে নূরুল ইসলাম ও আমি ছিলাম ১০-১৫ বছরের ছোট। ফলে পরিকল্পনা কমিশন বৈঠক ডাকলেও তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে আসতে চাইতেন না।’

তৎকালীন আমলাদের এই পরিস্থিতি এখন আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করেন রেহমান সোবহান। বলেন, ‘তখন হয়তো মানুষের এই দিকগুলো সম্পর্কে অতটা বুঝতাম না, এখন ৮৭ বছর বয়সে আমি তাঁদের অবস্থা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি।’ তিনি বলে চলেন, ষাটের দশকে আমলারা রাজনীতিকদের পাত্তাও দিতেন না। কিন্তু স্বাধীনতার পর একদিকে তাঁদের মতো তরুণদের ডাকে বৈঠক করা বা দাপুটে মন্ত্রীদের সঙ্গে কাজ করা—এসব তাঁরা মানতে পারছিলেন না।

তবে তাঁদের একজন সদস্যের সঙ্গে আমলাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক বেশি ভালো ছিল। রাজনীতিকেরা কখনো মনে করতেন, তিনি রাজনীতির অঞ্চলে ঢুকে যাচ্ছেন। আবার তাঁর নিজের সঙ্গেও বেশ কয়েকজন আমলার সুসম্পর্ক ছিল।

এ পর্যায়ে সঞ্চালক এই প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, এখন আবার দেখা যাচ্ছে, আমলারা রাজনীতিকদের চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান হয়ে যাচ্ছেন। এমনকি রাজনীতিকেরাও এ বিষয়ে অভিযোগ করছেন। সঞ্চালকের কথার রেশ টেনে রেহমান সোবহান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি শুনেছি, আমলারা নাকি মন্ত্রীদের নিজ ব্যবসায় মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেন। আমরা তো সবাই জানি, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের বড় অংশই ব্যবসায়ী। সেই দিক থেকে আইয়ুব খানের মডেলের সঙ্গে এখনকার মডেলের মিল দেখা যায়, যদিও তা পুরোপুরি এক নয়। কারণ, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অনেক বেশি ক্ষমতা রাখেন।’

সঞ্চালক প্রশ্ন রাখেন, পরিকল্পনা কমিশনে কাজ করার সময় কখনো আওতার বাইরে যেতে হয়েছে কি না। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অতীতে ফিরে যান রেহমান সোবহান। বলেন, ‘আমার প্রিয় একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করি। সুনামগঞ্জের ছাতকে তখন ছিল দেশের একমাত্র সিমেন্ট কারখানা।

তখন দেশে সিমেন্টের সংকট চলছে। কারখানায় গিয়ে আমি দেখলাম, অনেক সিমেন্টের বস্তা স্তূপ করে রাখা আছে। কারখানা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা সিমেন্ট সরবরাহ করতে পারছেন না কেন। জবাবে তিনি বললেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের পারমিট দিয়ে থাকে, কাকে কত সিমেন্ট দিতে হবে। পারমিট না পেলে আমরা কিছু করতে পারি না।”’

বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলতে থাকেন, কারখানার ঠিক ওপারেই তখন আরেকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছিল। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, জার্মান প্রকৌশলীরা কাজ করছেন এবং বড় বড় যন্ত্রপাতি খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। এ অবস্থা দেখে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, এসব এভাবে পড়ে আছে কেন। জবাবে প্রকৌশলীরা বলেন, ‘আমরা সিমেন্টের অভাবে গুদাম বানাতে পারছি না।’

এরপর সেই প্রকল্প এলাকা থেকে আবার ছাতক কারখানায় ফিরে আসেন রেহমান সোবহান। তাঁদের বলেন, ‘দেখুন, আমি জানি, এই ক্ষমতা আমার নেই। তবু আমি লিখিত আদেশ দিচ্ছি, আপনারা নদীর ওপারের প্রকল্পে সিমেন্ট দিন।’ কারখানা কর্তৃপক্ষও তাঁর আদেশ মান্য করে সেখানে সিমেন্ট পাঠায়।

ছাতক থেকে ঢাকায় ফিরে রেহমান সোবহান বাণিজ্যসচিব ও প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি লেখেন। জবাবে বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘এটা আপনার দায়িত্ব নয়’। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও তাঁকে ভর্ৎসনা করা হয়। তবে পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন তাঁর সরাসরি সাক্ষাৎ হয়, তখন প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রশংসা করেন। বলেন, ‘আমাদের দেশ প্রকৃত অর্থেই অদ্ভুতভাবে চলছে। তবে আমি খুশি, আপনি এ কাজ করেছেন।’

সঞ্চালক একসময় বলেন, ষাটের দশকে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আপনি অনেক উদ্ধত ছিলেন। এ বিষয়ে রেহমান সোবহানের রসিকতাপূর্ণ উত্তর ছিল, ‘আমি তখন উদ্ধত ছিলাম, এটা ঠিক। এই বিশেষণের জন্য আমি খুশি। তবে আমার ঔদ্ধত্য তখন শৌখিন প্রকৃতির (অ্যামেচার অ্যারোগেন্স) ছিল।’