ডিমের দাম কমাতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে

কায়সার আহমেদ

ডিম আমদানির বিষয়ে সরকার অনুমতি দিতেই পারে। বাজারে ডিমের দামও নির্ধারণ করে দিতে পারে। তবে এসব সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক হলো, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। সরকারের সিদ্ধান্তে ডিমের দাম কমবে কি না, জানি না। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে কোনো কিছুর দামই দ্রুত কমে না।

সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছি, চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশের এক দিনের মোট উৎপাদিত ডিমের পরিমাণও প্রায় একই। ভারত থেকে আমদানি করলে আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রতিটি ডিম ১২ টাকার বেশি পড়তে পারে বলে আমার ধারণা।

অন্যদিকে সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরই হিসাব করে জানিয়েছে, দেশে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা। এই ডিম উৎপাদন পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১১ টাকা ৩০ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকা করে বিক্রি মূল্য নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

অনেকে অভিযোগ করেন, এই খাতের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কারণে ডিমের দাম কমছে না। বাস্তবতা হলো, দেশে দৈনিক প্রায় চার কোটি ডিম উৎপাদিত
হয়। এর মধ্যে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এক কোটি ডিম উৎপাদন করে। বাকি ডিম উৎপাদিত হয় প্রান্তিক খামারগুলোতে।

ডিমের দাম নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনে স্বপ্রণোদিত মামলা হচ্ছে বড় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এ কারণে ডিমের দাম বেঁধে দেওয়া কিংবা আমদানির বিষয়ে কথা বলা হয়তো ঠিক হবে না। তবে এটুকু বলতে পারি, উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ না নিয়ে দাম বেঁধে দেওয়া ও আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া বিবেচনাপ্রসূত হয়নি। ডিমের দাম কমাতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এটাই একমাত্র যুক্তিযুক্ত উপায়।

কাঁচামালের সংকটের কারণে গত কয়েক বছরে বহু প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় কম পরিমাণে ডিমের উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষের ডিম খাওয়ার পরিমাণও বেড়েছে। এ অবস্থায় সরকারের কাজ হবে যেসব খামার বন্ধ হয়েছে, সেগুলো চালু করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া। তা না করে ডিম আমদানি করা হলে আরও বেশিসংখ্যক প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

  • কায়সার আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড এগ