ডিজিটাল যুগে কাগজের ভোগান্তি

আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণ না থাকলে ৩৮ ধরনের সেবা মিলবে না। ব্যাংকঋণ, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার, সঞ্চয়পত্র কেনা—এমন প্রয়োজনীয় সেবা পেতেও রিটার্ন জমার স্লিপ নিয়ে যেতে হবে। এতে করদাতা-সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি বাড়ছে।

তবে এই কাগুজে স্লিপের বিকল্প ও সহজ উপায় আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইটে গিয়ে টিআইএন নম্বর দিয়ে ওই সেবাগ্রহীতা করদাতা আগের বছর রিটার্ন দিয়েছেন কি না, তা জানা যায়। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সেই পথে হাঁটছেন না। তাঁরা চান, রিটার্ন জমার কাগুজে দলিল। ফলে করদাতাদের ভোগান্তি বাড়ছে।

আরও পড়ুন

জানা গেছে, অনেক করদাতা ব্যাংক কর্মকর্তা বা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজের আয় ও করের পরিমাণ প্রকাশ করতে চান না। কিন্তু রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে তা উল্লেখ থাকে।

আরও পড়ুন

রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ছাড়াই ব্যাংক কর্মকর্তা বা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা চাইলে সহজেই জানতে পারবেন, ওই সেবাগ্রহীতা রিটার্ন দিয়েছেন কি না। ধরুন, আপনি ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য ব্যাংকে গেলেন। ব্যাংক কর্মকর্তা আপনার কাছে সর্বশেষ করবর্ষের রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র চাইলেন। আপনি যদি তা না দেখাতে পারেন, তাহলে আপনাকে সঞ্চয়পত্র দেবেন না। কিন্তু ওই কর্মকর্তাকে আপনার টিআইএন নম্বরটি দিলে তিনি নিজের সামনে থাকা কম্পিউটার থেকে এনবিআরের ওয়েবসাইটে ঢুকে সহজেই যাচাই-বাছাই করতে পারবেন, আপনি রিটার্ন দিয়েছেন কি না। টিআইএন নম্বর দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে ওই করদাতার নাম, সর্বশেষ করবর্ষ ও করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন কি না, সেই সব তথ্য। কিন্তু কাজটি ব্যাংক কর্মকর্তারা করতে চান না। অথচ এনবিআর কয়েক মাস আগেই তাদের ওয়েবসাইটে এ ব্যবস্থা চালু করেছে।

আরও পড়ুন

এ ছাড়া ৩৮ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যেসব সেবা পেতে রিটার্ন জমা দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে আছে ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ আবেদন, ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ক্রেডিট কার্ড নেওয়া, কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে, ব্যবসায় সমিতির সদস্য হলে, কারও সন্তান বা পোষ্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করলে, অস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে ইত্যাদি।