মালিকানা পরিবর্তনের পর দ্বিতীয়বার কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল)। শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা (প্রবেশনারি অফিসার) ও মাঠ কর্মকর্তা (ফিল্ড অফিসার) নিয়োগ দিতে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এ পর্যায়ে ঠিক কতজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে, তা প্রকাশ করা হয়নি। ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তারাও তা প্রকাশ করতে রাজি হননি।
ব্যাংকটির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছিল ২০১৭ সালে। এরপর ২০২১ সালে একবারই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছিল ব্যাংকটি। সেবার ২০০ শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এরপর প্রতিবছর নিয়োগ কার্যক্রম চললেও কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। এসব নিয়োগে ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিকতা ও যাচাই–বাছাই। এভাবে ব্যাংকটিতে প্রায় আট হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে ব্যাংকটির জনবল ছিল ১২ হাজার ৯৮৫ জন, যা ২০২২ সালে বেড়ে হয় ২০ হাজার ৮০৯ জন। ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া যায়।
মতিঝিলে জমি বেচল ইসলামী ব্যাংক
এবার মাঠ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে স্নাতক। আবেদনের শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল। আর শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা পদে আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ মার্চ। শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা পদে আবেদনের যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। এই পদের বেতন শুরুতে ৪৮ হাজার টাকা, এক বছর পরে যা বেড়ে হবে ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাচাই–বাছাই করে কমসংখ্যক আবেদনকারীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এরপর দুই ধাপে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।
কোনো নির্দিষ্ট এলাকার আবেদনকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন না।মোহাম্মদ মনিরুল মওলা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইসলামী ব্যাংক
এ নিয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মওলা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা মেধাবী, তাঁরাই যোগ্য বিবেচিত হবেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর ভাইভা হবে। উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে প্যানেল করা হবে। এক বছরের মধ্যে যখন প্রয়োজন হবে, সেই প্যানেল থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। কোনো নির্দিষ্ট এলাকার আবেদনকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন না।’
এত দিন পর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ নিয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ মনিরুল মওলা বলেন, ‘মাঝে আরও বিজ্ঞপ্তি হয়েছে। সব পদের বিজ্ঞপ্তি প্রয়োজন হয় না।’
ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ছয় বছরে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের অনেকের সনদ নেই। তাঁদের প্রায় সবার স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রামে। আবার যাঁদের স্নাতক ডিগ্রি আছে, তাঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ অনিয়মের কারণে আলোচনায় রয়েছে ব্যাংকটি। এর মধ্যেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ফলে এবারের নিয়োগ কতটা স্বচ্ছ ও নিয়মমাফিক হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আবেদনকারীরা।