রিটার্ন জমা দিতে ভিড় বাড়ছে

রিটার্ন জমা দিতে করদাতা ভিড় করছেন কর অঞ্চলে। আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায়।ছবি: শফিকুল ইসলাম

আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে চলতি মাসেই। সেই হিসেবে চলমান করাঞ্চলে সেবা মাসও শেষ সপ্তাহে গড়িয়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে করাঞ্চলে আসা করদাতাদের অংশগ্রহণ অনেকটাই ঢিলেঢালা ছিল। তবে আজ রোববার থেকে করদাতাদের ভিড় বাড়ছে। তাঁদের অধিকাংশ নিয়মিত ও তরুণ করদাতা।

আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ১, ৫, ৭, ৮, ১০ ও ১১ নম্বর কর অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই করাঞ্চলের বুথগুলোয় রিটার্ন জমা দিতে ভিড় করেন করদাতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তরুণ–বয়স্ক–নারী–পুরুষনির্বিশেষে বিভিন্ন পেশার মানুষ। যদিও সরকারি চাকরিজীবীদের সংখ্যা ছিল অনেক।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ৮০ লাখ টিআইএনধারী আছেন। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৯ লাখ করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন।  

আরও পড়ুন

নারায়ণগঞ্জ থেকে রোববার সকালে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে সেগুনবাগিচায় আসেন মমতাজ বেগম। এই প্রথমবার রিটার্ন জমা দিতে আসা মমতাজ বেগম বলেন, সঞ্চয়পত্রের জন্য টিআইএন খুলতে হয়েছিল। যেহেতু টিআইএন থাকলে রিটার্ন জমা দিতে হয়, সে জন্যই এসেছি। ঢাকার পরিবর্তে নারায়ণগঞ্জে কর কার্যালয় থাকলে সুবিধা হতো বলে জানালেন তিনি।

সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব জহির উদ্দিন ক্রাচে ভর দিয়ে আসেন আয়কর রিটার্ন জমা দিতে। দেড় দশক ধরে নিয়মিত রিটার্ন জমা দিচ্ছেন তিনি। শুরুতে দুই বছর এক আইনজীবীর মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। তবে সেটা জটিল মনে হওয়ায় এরপর থেকে নিজেই জমা দিতে আসেন।

জহির উদ্দিন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, নিজে রিটার্ন জমা দিতে আসা ভালো। এতে কোনো ভুল হলে সরাসরি জানা যায়। ঠিকও করা যায়। পরে এটা নিয়ে জটিলতা হয় না।’

আরও পড়ুন

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত  ১০ নম্বর কর অঞ্চলে ২৩ হাজার ৯৮১ জনের রিটার্ন জমা হয়েছে। এর মাধ্যমে আয়কর আদায় হয়েছে ৩২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। শুধু গত বৃহস্পতিবারে রিটার্ন জমা হয়েছে ২ হাজার ৬৬৫ জনের।

কর অঞ্চল-১০–এর পরিদর্শক আমির হোসেন জানান, রিটার্ন জমাকারীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত ৫০ শতাংশ বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে রিটার্ন ফর্ম আছে, চালানের কাগজ আছে। এ ছাড়া তথ্যকেন্দ্র থেকে সার্বক্ষণিক সহায়তা করা হচ্ছে করদাতাদের। আর সব কাগজ ঠিক থাকলে দুই মিনিটেই কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

জমাকারীদের অনেকেই আবার অন্যের হয়ে রিটার্ন জমা দিতে এসেছেন। বড় বোনের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে এসেছেন স্নাতকের শিক্ষার্থী আফরোজা খানম। তিনি বললেন, ‘বড় বোন কর্মস্থলে থাকায় নিজে আসতে পারেননি। তবে তিনি সব কাগজ পূরণ করে দিয়েছেন। এখানে আসার পর পাঁচ মিনিটে রিটার্ন জমা দিতে পেরেছি।’

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর দেশের প্রতিটি কর অঞ্চলে করদাতাদের জন্য সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়। সেখানে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্ন জমার প্রাপ্তিস্বীকারপত্রও পাচ্ছেন করদাতারা। এ ছাড়া ই-রিটার্ন জমা দিতে আগ্রহী করদাতাদের জন্য আছে আলাদা বুথ।