ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গতকাল সকালেও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যেই বগুড়ার মহাস্থান হাট ছিল কৃষক, পাইকার আর ফড়িয়াদের হাঁকডাকে সরগরম। বাজারে সবজির সরবরাহও ছিল বেশ, তবে দাম চড়া। এক দিনের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। সেই সবজি হাত বদলে বগুড়া শহরের বাজারে যেতেই দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে।
মহাস্থান হাটে পাইকারিতে গত সোমবার প্রতি কেজি ফুলকপির দাম ছিল ৪৫ টাকা, বগুড়া শহরে সেই ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। একইভাবে ৩০ টাকার কাঁকরোল ৩৫ টাকা, ১৫ টাকার মুলা ২২ টাকা, ১২ টাকার পটোল ১৮ টাকা, ৩০ টাকার বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ২৫ টাকার বরবটি ৩০ টাকা, ১৫ টাকার শসা ৩০ টাকা, ৩০ টাকার দেশি আলু ৩২ টাকা, ১৭ টাকা ঢ্যাঁড়স ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মহাস্থান হাটের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির কারণে কলা, ফুলকপি, মুলাসহ কৃষকের বেশ কিছু সবজি খেতের ক্ষতি হয়েছে। এতে হাটে সবজির আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও দাম বেড়েছে।
বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে প্রভাবে সোমবারের ঝড়–বৃষ্টিতে কলা ও সবজিখেতের ক্ষতি হয়েছে। বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক-সংলগ্ন সদরের দীঘলকান্দিতে কলাবাগানেরও ক্ষতি হয়েছে।
দীঘলকান্দি গ্রামের কলাচাষি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিতে কলাবাগান করেছেন। প্রচুর কলাও ধরেছে। মাসখানেক পর সেই কলা পাকা শুরু হতো। তবে সোমবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে বাগান লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তাতে অপরিপক্ব কলা খেতেই নষ্ট হয়েছে।
বগুড়া-জয়পুরহাট সড়কের শিবগঞ্জ উপজেলার উথলি গ্রামের চাষি হাফিজার রহমানকে তাঁর বাগানের কলা কাটতে দেখা গেল। তিনি বলেন, ‘কলা চাষে এবার বেশি খরচ হয়েছে। বাগানে অনেক কলাও ধরেছিল। কয়েক দিন পর এসব কলা বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু সোমবারের ঝড়ে সব শেষ।’
পাশেই একটি ফুলকপির খেতে জমা পানি সেচের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন সবজিচাষি জয়নাল মিয়া। তিনি বলেন, ‘ঝড়ে খেতে পানি জমছে। তাতে কপি পচে যাবে। অসময়ের এ ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লাম।’
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সবজি খেতের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। ভেঙে পড়া কলাগাছ থেকে আবার কুশি বের হবে। আর সবজি খেতে যে পানি জমেছে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে পারলে ফলনে কোনো প্রভাব পড়বে না।