নয় মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ দিতে বরাদ্দের ৯৪ শতাংশ অর্থ খরচ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারছবি: সংগৃহীত

জাতীয় বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকে। কিন্তু সেই বরাদ্দে এবার টান পড়তে যাচ্ছে। কারণ, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই (জুলাই-মার্চ) বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ করা অর্থের ৯৪ শতাংশ খরচ হয়ে গেছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে টাকার অঙ্কে সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৬০১ কোটি টাকা সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে। বাজেট বই ঘেঁটে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জন্য বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ৯ মাসেই খরচ হয়ে গেছে এ খাতে বরাদ্দ ৯৪ শতাংশ অর্থ।

আরও পড়ুন

অবশ্য ঋণদাতা সংস্থা ও দেশকে স্থানীয় মুদ্রা টাকায় ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করা হয় না। মার্কিন ডলার কিংবা অন্য বিদেশি মুদ্রায় এই অর্থ পরিশোধ করা হয়। কিন্তু বাজেটে হিসাব রাখার সুবিধার জন্য সুদ বাবদ স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ রাখা হয়। তবে বাজেট ঋণের মূল পরিশোধের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ রাখা হয় না।
ডলারের বাড়তি দামের কারণে টাকার অঙ্কেও ঋণ পরিশোধ অনেক বেড়ে গেছে। ইআরডির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুলাই-মার্চ সময়ে সুদ ও আসল মিলিয়ে ২৮ হাজার ২৮১ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ পরিশোধ হয়েছে। গতবার একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে এ খাতে খরচ ৬৬ শতাংশ বেড়েছে

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৯ কোটি ডলার বেড়েছে। গত ৯ মাসে সব মিলিয়ে ২৫৭ কোটি ডলারের বেশি সুদ ও আসল পরিশোধ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি ডলার। ডলারের হিসাবে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৫১ শতাংশ।

আরও পড়ুন

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, চীন ও রাশিয়ার স্বল্প মেয়াদের ঋণের কারণে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। ইতিমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোরেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের কিস্তিও শুরু হয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধও শিগগির শুরু হবে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হলে চাপ আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন