আগাম কর প্রত্যাহার চায় এফবিসিসিআই

  • প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নিজেদের মতামত তুলে ধরে বেশ কিছু খাতের শুল্ক-কর কমানো ও প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।

  • ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়করহার ৩৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

  • বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

শিল্প খাতের ৩ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর নিজেদের মতামত তুলে ধরে সংগঠনটি বলেছে, শিল্প পরিচালনা ব্যয় কমানোর জন্য আমদানি পর্যায়ে শিল্প খাতের কর প্রত্যাহার করতে হবে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই খাতে আগাম কর ৩ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন। এ ছাড়া ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়করহার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার অনুরোধও জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

নিজেদের মতামত তুলে ধরে বাজেট পাসের আগে তাদের প্রস্তাব বা দাবিগুলো মূল্যায়নের জন্য গতকাল রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয় এফবিসিসিআই।

চিঠিতে বলা হয়, করোনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষা খাত। সে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বাজেটে অর্থমন্ত্রী ১০ আসনের নিচের মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু ১০ থেকে ১৫ আসনের মাইক্রোবাসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ বহাল রয়েছে। তাই এ শুল্ক প্রত্যাহার করে মোট করহার কমানোর প্রস্তাব করেছে এফবিসিসিআই। একই সঙ্গে কৃষিভিত্তিক হিমাগার শিল্প খাতে আয়কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

চিঠিতে এফবিসিসিআই বলছে, নদী খননযন্ত্রের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটি আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে এফবিসিসিআই বলেছে, ১ শতাংশ শুল্কে ড্রেজার আমদানির সুযোগ দেওয়া হলে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সহজ হবে।

রং ও রং-জাতীয় পণ্যকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা না করে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে চিঠিতে এফবিসিসিআই বলেছে, বর্তমানে এই পণ্যের স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরোপিত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা দরকার।

এনবিআরকে লেখা চিঠিতে এফবিসিসিআই আরও বলেছে, যারা বাইসাইকেল ও বাইসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানি করে, তাদের সঙ্গে যারা দেশে বাইসাইকেল উৎপাদন ও প্রস্তুত করে, তাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই অসম প্রতিযোগিতা দূর করতে হবে। বর্তমানে যারা বাইসাইকেল ও বাইসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানি করে, তাদের শুধু ৫ শতাংশ উৎসে আয়কর দিতে হয়। অন্যদিকে যারা দেশে বাইসাইকেল যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও তৈরি করে তাদের দুবার কর দিতে হয়।

সব ধরনের সুতার ওপর ৩ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর রয়েছে। সেটি প্রত্যাহার চায় এফবিসিসিআই। দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন এবং সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া, প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।

সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে উপজেলা পর্যায়ে আয়কর ও ভ্যাট অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করেছে এফবিসিসিআই। সংগঠনটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এখন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের কাজে টিআইএন নম্বর ব্যবহার করা হয়। টিআইএন নম্বরের পাশাপাশি পেমেন্টের প্রমাণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।