উত্তরের চায়ে গরম হাওয়া, উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

প্রথম আলো ফাইল ছবি

পঞ্চগড়সহ দেশের উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে। গত মৌসুমের চেয়ে সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে সাত লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদিত হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ফলে চায়ের জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশই উৎপাদিত হয়েছে সমতল ভূমিতে। গত রোববার চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনার মধ্যেও দেশের অন্যান্য চা–বাগানের মতো সমতলের চা–বাগানের কার্যক্রমও স্বাভাবিক ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি নিলামকেন্দ্র চালু রাখা, যথাযথ সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, চা–শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিসহ অন্যান্য উদ্যোগের ফলে ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আল মামুন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২০ সালে দেশজুড়ে তৈরি চায়ের উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮ কোটি ৬৪ লাখ কেজি চা। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলার (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট) সমতল ভূমিতেই উৎপাদিত হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি। গত মৌসুমের চেয়ে এবার সাত লাখ কেজির বেশি চা উৎপাদিত হয়েছে উত্তরের পাঁচ জেলায়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবার জাতীয় উৎপাদনের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ চা যুক্ত হয় সমতলের এই ৫ জেলা থেকে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২০ সালে এ অঞ্চলে সবুজ চা–পাতা উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ১৩ লাখ কেজি, তা থেকে তৈরি চা উৎপাদিত হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি। ২০১৯ সালে প্রায় ৯৬ লাখ কেজি তৈরি চা উৎপাদিত হয়েছে এ অঞ্চলে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলাও চা চাষে এগিয়ে যাচ্ছে।

১৯৯৬ সালে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় সফরে এসে সমতলে চা চাষের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। এরপর ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে পঞ্চগড়ে ১৭টি ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি চা কারখানা চালু রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত ১০টি ও অনিবন্ধিত ১৭টি বড় চা–বাগান রয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৫১০টি নিবন্ধিত ও ৫ হাজার ৮০০টি অনিবন্ধিত ছোট ছোট চা–বাগানে (০ থেকে ২৫ একর) রয়েছে।