জিআই সনদ পেল দেশের আরও ৬ পণ্য

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পেল ছয়টি পণ্য। সেগুলো হলো ঢাকাই মসলিন, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, নেত্রকোনার বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে জিআই সনদপত্র তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ নিয়ে মোট নয়টি পণ্য জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেল। বাকি তিনটি হলো ইলিশ, জামদানি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম।

এ নিয়ে ৯টি পণ্য বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেল। আজ ৬ পণ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে জিআই সনদ হস্তান্তর করা হয়। আগেই অপর তিনটির সনদ দেওয়া হয়েছিল।

কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই ৯ পণ্য বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেল। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে জিআই সনদ হস্তান্তর করা হয়।

নয়টি পণ্য বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের জন্য ব্র্যান্ড। জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়বে। রপ্তানিও বাড়বে। একই সঙ্গে এসব পণ্যের দাম বাড়বে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।
আবদুস সাত্তার, রেজিস্ট্রার, ডিপিডিটি

জানতে চাইলে ডিপিডিটির রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত সচিব) আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, এখন থেকে এই ৯ পণ্য বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। অন্য কোনো দেশ এসব পণ্যের নাম নিজেদের বলে দাবি করতে পারবে না। আবদুস সাত্তার বলেন, নয়টি পণ্য বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের জন্য ব্র্যান্ড। জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়বে। রপ্তানিও বাড়বে। একই সঙ্গে এসব পণ্যের দাম বাড়বে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিপিডিটির শীর্ষ কর্মকর্তা।

আজ বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে ঢাকাই মসলিনের জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ আলম, রংপুরের শতরঞ্জির জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, রাজশাহী সিল্কের জন্য বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, বিজয়পুরের সাদা মাটির জন্য নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমান এবং দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (বিআরআরআই) মহাপরিচালক শাহজাহান কবীরের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা। আজকের অনুষ্ঠানে ‘পেটেন্ট’–এর জন্য বিজয় ডিজিটালের স্বত্বাধিকারী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং হিসাব লিমিটেডকে সনদ দেওয়া হয়।

ট্রেডমার্কস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, মোহনা টেলিভিশন, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে। এ ছাড়া ডিজাইনের জন্য বিডি ফুড লিমিটেড, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।