ত্রিপুরার পর আসামে নৌপথে পণ্য রপ্তানি

ফাইল ছবি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার পর এবার আরেক রাজ্য আসামেও নৌপথে পণ্য যাবে। নতুন এ ক্ষেত্রে পণ্য নেওয়া হবে সিলেটের কুশিয়ারা নদী দিয়ে। এবারও প্রিমিয়ার ব্র্যান্ডের সিমেন্টই যাবে। আজ রোববার প্রিমিয়ার সিমেন্টের নারায়ণগঞ্জের কারখানা থেকে আসামের করিমগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করবে জাহাজ।

নৌপথে প্রথমবারের মতো আসাম তথা করিমগঞ্জে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এটি কোনো পরীক্ষামূলক চালান নয়। নিয়মিত চালান হিসেবেই পণ্য পাঠানো হচ্ছে এই নৌপথে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার নৌ প্রটোকলের আওতায় নৌপথে বাণিজ্য হয়। আগে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ছাড়া অন্য কোনো রাজ্যের সঙ্গে নৌ প্রটোকলে নিয়মিত রপ্তানি হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে ত্রিপুরার সঙ্গে প্রিমিয়ার সিমেন্টের চালান গেছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার এই নৌপথে সিমেন্ট নেওয়ার চালানটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এ চালানে আজ দুপুর নাগাদ এ ভি প্রিমিয়ার নামের একটি পণ্যবাহী জাহাজ আড়াই হাজার ব্যাগ বা ১২৫ টন সিমেন্ট নিয়ে করিমগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হবে। প্রথমে চালানটি নারায়ণগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু করে মেঘনা নদী দিয়ে আশুগঞ্জ পৌঁছাবে। তারপর মেঘনা নদী থেকে সিলেটের কুশিয়ারা নদী দিয়ে সীমান্ত এলাকা জকিগঞ্জে যাবে। সেখান থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসামের করিমগঞ্জ এলাকায় নোঙর করবে। পুরো পথ পাড়ি দিতে সাত দিন সময় লাগতে পারে। করিমগঞ্জের কর অ্যান্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই সিমেন্টের চালান নিচ্ছে। ৯ নভেম্বর করিমগঞ্জে পণ্যের চালান গ্রহণ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে আসাম সরকার।

এটি কোনো ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নয়। মূলত দুই দেশের মধ্যে সরাসরি পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য এই নৌপথ ব্যবহার করা হবে।

প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপক (রপ্তানি) সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নৌপথে আসামের সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্যের দ্বার খুলছে। এই নৌপথ চালু হলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্য আরও বাড়বে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভারতের আগ্রহের ভিত্তিতে গোমতী দিয়ে ত্রিপুরার নৌপথের পরে কুষ্টিয়া দিয়ে করিমগঞ্জের সঙ্গে নৌপথটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কুশিয়ারায় নাব্যতার সমস্যা নেই। সারা বছরই ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ধরে রাখা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নৌ প্রটোকলের আওতায় এই নৌপথটি ট্রানজিট হিসেবে এত দিন ব্যবহার করেছে ভারত। এবার বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য ব্যবহার শুরু হলো।

ত্রিপুরা, আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সড়ক, নৌ ও রেলপথের উন্নয়ন করতে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। আবার আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে ১১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বারইয়ার হাট থেকে রামগড় সীমান্ত পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করা হচ্ছে।