করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় পোশাকশ্রমিকদের মজুরি দিতে প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করে সরকার। সেই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে দেড় হাজারের বেশি রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের মালিক শ্রমিকদের চার মাসের মজুরি পরিশোধ করেন। সেই ঋণের কিস্তি পরিশোধে মালিকেরা সময় চাইলে, সরকার মেনে নেয়। বর্তমানে আবার নতুন করে সময় চাইছেন পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা। ফলে আদৌ মালিকেরা প্রণোদনার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবেন কি না, তা নিয়ে ব্যাংকসহ নানা মহলে শঙ্কা রয়েছে।
অবশ্য পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ঋণের কিস্তি দেওয়া শুরু করেছি। আমরা বাড়তি সময় চেয়েছি কারণ, করোনায় অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে গেছে। সময়মতো পাওনা না পেয়ে রুগ্ণ হয়েছে অনেক কারখানা। আবার বর্তমানে শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে হচ্ছে। প্রণোদনার ঋণের টাকা ফেরত দেব না, এমনটা হবে না। নতুন করে যাতে আর কোনো কারখানা রুগ্ণ না হয়, সে জন্যই কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করেছি।’
অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ইআরএফ ডায়ালগে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত এই ডায়ালগে আরও ছিলেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ও সহসভাপতি শফিকুল আলম।
র্যাব এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত। তবে আমরা আমাদের কাজ করছি। আমি মনে করি, আমরা আমাদের জায়গায় ঠিক আছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বড় বাজার। আমরা কোনো বাজার হারাতে চাই না।’
গত ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র্যাব এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও রাজস্ব বিভাগ পৃথক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করার খবরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হয়।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন ফারুক হাসান। ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে একেকজনের চিন্তাভাবনা একেক রকম। অনেক মালিকই চান না ট্রেড ইউনিয়ন হোক। আবার অনেকেই ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। অবশ্য ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রম অধিকারের বিষয়ে আইনে যেটি আছে, সেটি করতে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।