ভোটে জিততে ৮১ প্রতিশ্রুতি

করোনার শুরুতে সরকার পোশাকশ্রমিকদের চার মাসের মজুরি দিতে প্রণোদনা দেয়। ঋণ পরিশোধের সময় আসার পর পোশাকশিল্পের মালিকেরা গড়িমসি করেন। বাড়তি সময় চান। তখন সরকার ছয় মাস সময় বাড়িয়ে দেয়। এখন অনেক মালিক সেই ঋণ পরিশোধে ১৮ মাসের পরিবর্তে বছর পাঁচেক সময় চান। বিষয়টিকে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভোটে কাজে লাগাতে চায় সম্মিলিত পরিষদ।

প্রণোদনার ঋণ পরিশোধের সময় ১৮ মাস থেকে বৃদ্ধি ও কিস্তির আকার ছোট করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব দেওয়াসহ ৮১টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার উন্নয়ন, ব্যবসা থেকে প্রস্থান নীতিমালা, নতুন বাজার সম্প্রসারণ, কাস্টমস, কর ও মূসক নীতিমালা সংস্কার, শ্রম ও ব্যাংকিং নীতিমালা সংস্কার, ভাবমূর্তি উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় রয়েছে।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা ও সভাপতি পদপ্রার্থী ফারুক হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সিদ্দিকুর রহমান।

আগামী ৪ এপ্রিল বিজিএমইএর ২০২১-২৩ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নিচ্ছে দুই দল বা জোট। সংগঠনের ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালক পদের বিপরীতে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ বি এম সামসুদ্দিন। তবে ফোরামের পক্ষে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক নির্বাচন করছেন।

সম্মিলিত পরিষদ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মালিক কল্যাণ তহবিল গঠন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরও ২০৩১ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানিসুবিধা অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও সরকারের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার ব্যবস্থা, নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানির জন্য প্রণোদনা ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করা, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় পোশাকের শুল্কমুক্ত রপ্তানি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা, আমদানি ও রপ্তানির নিরীক্ষা কার্যক্রমে অটোমেশন, কাস্টমসসংক্রান্ত হয়রানি বন্ধ, পণ্য খালাস ও নিরীক্ষা কার্যক্রম চলাকালে জটিলতা নিরসন, উৎসে কর সহনীয় পর্যায়ে রাখা, শ্রম আইন সংস্কার করে প্রতি ৫ বছরে শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের বাধ্যবাধকতার নীতিমালা সংস্কার, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে পণ্য পরিবহন কার্যক্রমকে সহজ ও সাশ্রয়ী করাসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা ফারুক হাসান বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী পোশাকের চাহিদা কমে গেছে। বর্তমানে আমাদের বাজার হিস্যা ৭ শতাংশের নিচে। বাজার পুনরুদ্ধার করাই হবে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’