হোটেল-রেস্তোরাঁয় গ্রাহকদের বসিয়ে খাওয়াতে চান মালিকেরা

ছবি: প্রথম আলো

কাল রোববার থেকে দেশের সব রেস্টুরেন্ট পুরোপুরি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রেস্টুরেন্ট চালু করতে চান মালিকেরা। না হলে থালা-বাটি নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা শহর মিলে হোটেল-রেস্তোরাঁর সংখ্যা ৬০ হাজার। হোটেল রেস্তোরাঁর সঙ্গে জড়িত ৩০ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতটি। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা শহর মিলে হোটেল-রেস্তোরাঁর সংখ্যা ৬০ হাজার। হোটেল রেস্তোরাঁর সঙ্গে জড়িত ৩০ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী। সব মিলিয়ে রেস্তোরাঁ খাতের ওপর নির্ভরশীল মানুষ প্রায় দুই কোটি। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জীবন–জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখে তাই আগামীকাল রোববার থেকে রেস্টুরেন্ট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

হোটেল-রেস্তোরাঁ চালুর পাশাপাশি সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবিও তুলে ধরেছেন সমিতির নেতারা। তার মধ্যে অন্যতম এ ব্যবসাকে চলমান রাখার জন্য চলতি মূলধন হিসেবে বিনা সুদে ঋণসুবিধা।

বর্তমানে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও কেউ সেখানে বসে খেতে পারেন না। শুধু খাবার কিনে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকেরা চান স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোপুরি চালু করতে। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ বসে খাওয়ার সুযোগ পাবেন। ইমরান হাসান বলেন, ‘পুরোপুরি না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্ততপক্ষে ৫০ শতাংশ আসনে বসে খাওয়ার সুবিধা দিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ চালু করতে চাই আমরা।’

হোটেল-রেস্তোরাঁ চালুর পাশাপাশি সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবিও তুলে ধরেছেন সমিতির নেতারা। তার মধ্যে অন্যতম এ ব্যবসাকে চলমান রাখার জন্য চলতি মূলধন হিসেবে বিনা সুদে ঋণসুবিধা। সেটি না হলে স্বল্প সুদে জামানতবিহীন দীর্ঘমেয়াদি ঋণসুবিধার ব্যবস্থা করা। সমিতির নেতারা বলেন, করোনাকালে অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল বকেয়া পড়েছে। কোনো রকম বাড়তি মাশুল বা সারচার্জ ছাড়াই এসব পরিষেবা বিল দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় দিতে হবে।

চলমান করোনার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁর শ্রমিকদের কোনো ধরনের প্রণোদনাসুবিধা দেওয়া হয়নি।
ইমরান হাসান, মহাসচিব, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি

সংবাদ সম্মেলনে ইমরান হাসান বলেন, ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা শহরে ৯৮ শতাংশ ভাড়াটে হিসেবে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাই ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদের সহনীয় আচরণ করতে হবে। একই সঙ্গে ভাড়া মওকুফ করার বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, যেহেতু রেস্তোরাঁ খাতটি একটি সেবা খাত, সেহেতু হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিক ও শ্রমিকদের করোনাযোদ্ধা বা ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। এই খাতে কর্মরত মালিক-শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সমিতির মহাসচিব বলেন, চলমান করোনার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁর শ্রমিকদের কোনো ধরনের প্রণোদনাসুবিধা দেওয়া হয়নি।