দশ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি প্রায় ১০ শতাংশ

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের পণ্য রপ্তানি এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৪ হাজার ২১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।

গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বা তার বেশি পণ্য রপ্তানি হলেও গত মাসে সেটি কমে ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি চলতি অর্থবছরের যেকোনো একক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের এপ্রিলে রপ্তানি হয়েছিল ২৯৯ কোটি ডলারের পণ্য। সেই হিসাবে গত মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৮৩ শতাংশ।

রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান আজ সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বা ইপিবি। ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, গত মাসে তৈরি পোশাক, পাট ও পাট পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি বাড়লেও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে।

একাধিক রপ্তানিকারকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মাসের শুরুতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কারখানাগুলো ৮ থেকে ১০ দিন বন্ধ ছিল। সে কারণে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কম হয়েছে। তবে অর্থবছর শেষে পোশাক খাতে ভালো প্রবৃদ্ধির আশা করছেন তাঁরা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৪ হাজার ৪৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের জন্য ৫ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। কারণ, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে ১ হাজার ৭২৯ কোটি ডলারের রপ্তানি করতে হবে। অথচ এখন পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ২৬৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। নিট ও ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় কাছাকাছি। গত এপ্রিলে ২৩৯ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এদিকে চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত ৯৩ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। তবে গত মাসে চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি ১২ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ডলারের পণ্য।

কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৮৬ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। তার মধ্যে গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ডলারের পণ্য। যদিও গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় এই রপ্তানি ১৯ শতাংশ কম। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৬৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম।

বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানির খাতগুলোর একটি হোম টেক্সটাইল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৭৪ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। যদিও গত মাসে হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল।