চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ওঠানো–নামানোয় অচলাবস্থা

বন্দরের চার নাম্বার ফটকে সবসময় গাড়ির ব্যস্ততা থাকে। তবে গাড়ি মালিকদের কর্মসূচির কারণে ফটকটি এখন ফাকা। ছবিটি আজ সকালে তোলাছবি সৌরভ দাশ

চার দিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা চলছে। গাড়ি প্রবেশের মাশুল প্রায় চার গুণ করার প্রতিবাদে গাড়ির মালিকেরা অঘোষিতভাবে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

১৫ অক্টোবর থেকে বন্দরে গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল কার্যকর হয়। এর মধ্যে ভারী যানবাহনের প্রবেশে আগে মাশুল ছিল ৫৭ টাকা। তা প্রায় চার গুণ করে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এরপর ঘোষণা ছাড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন মালিকেরা।

সরেজমিনে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দেখা যায়, নগরের সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাইম মুভার মালিক সমিতি ও শ্রমিকেরা। এ সময় বন্দরমুখী প্রাইম মুভার ও লরিগুলোকে বাধা দিতে দেখা যায়। হ্যান্ডমাইক হাতে এসব যাববাহনকে বন্দরে ঢুকতে মানা করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বর্ধিত মাশুল তাঁরা দেবেন না।

জাহাজে ওঠানো ও নামানোর পর কনটেইনার পরিবহনে গাড়ি দরকার হয়। রপ্তানি পণ্য কনটেইনার ডিপো থেকে গাড়িতে করে বন্দরে এনে জাহাজে তোলা হয়। একইভাবে জাহাজ থেকে কনটেইনার বা পণ্য নামিয়ে ডিপো ও আমদানিকারকের চত্বরে নেওয়া হয়। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় এ দুই কাজই ব্যাহত হচ্ছে।

জানতে চাইলে প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি খান মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের একটা অংশ গাড়ি চালাতে চাইছে, কিন্তু মালিকেরা রাজি না হওয়ায় চালানো যাচ্ছে না।

মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাড়তি মাশুল কে দেবেন, শ্রমিক নাকি মালিক—এটা পরিষ্কার হয়নি। সে কারণে ১৪ অক্টোবর রাত থেকেই ট্রেইলার চলাচল করছে না। আগে শ্রমিকেরা মাশুল দিলেও এখন তাঁরা দেবেন না বলে জানিয়েছেন। মালিকপক্ষও দিতে চাইছে না।

প্রাইম মুভার মালিকদের ট্রেইলার চলাচল না করায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে আমদানি–রপ্তানি স্থবির হয়ে পড়বে, তৈরি হবে অচলাবস্থা। সে জন্য দ্রুত ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।

বন্দরের তিন নম্বর ফটক এলাকায় গাড়ি মালিকদের জড়ো হয়ে বন্দরে গাড়ি প্রবেশে বাধা
ছবি সৌরভ দাশ

এ বিষয়ে বেসরকারি ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচির কারণে ডিপো থেকে কনটেইনার পরিবহনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি, খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’