পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেল এপিএস নিট

দেশের আরও একটি তৈরি পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে। গাজীপুরের পুবাইলে অবস্থিত এপিএস নিট কম্পোজিট লিমিটেড গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে।

এ নিয়ে দেশের মোট ২১৪টি কারখানা পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি প্লাটিনাম ও ১২০টি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডের কারখানা।

বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসজিবিসি যে সনদ দেয়, তার নাম ‘লিড’। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে প্রতিটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে মান রক্ষা করতে হয়।

মোট সাতটি মানদণ্ডে লিড এই সনদ দিয়ে থাকে। এপিএস নিট কম্পোজিট লিমিটেড সাতটি মানদণ্ডে ১০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৭১। অবস্থান ও যাতায়াতে তারা পেয়েছে ১৪-তে ১৪; টেকসই অবস্থানে পেয়েছে ৪-এ শূন্য; পানির দক্ষ ব্যবহারে পেয়েছে ১৫-তে ৬; জ্বালানি ও পরিবেশ মানদণ্ডে ৩৫-এ পেয়েছে ২৭; উপকরণ ও সম্পদে ৯-এ ৮; অভ্যন্তরীণ পরিবেশগত মানে পেয়েছে ২৪-এ ১৬ আর উদ্ভাবনে পেয়েছে ১-এ শূন্য।

জানা যায়, ২০১১ সালে প্রথম বাংলাদেশি কোম্পানি পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পায়। সেবার মোট দুটি কারখানা এই স্বীকৃতি পায়। এরপর প্রতিবছর একাধিক কারখানা এই স্বীকৃতি পেয়েছে—সবচেয়ে বেশি পেয়েছে ২০২২ সালে—সেবার মোট ৩০টি কোম্পানি পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত আটটি কারখানা এই স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই স্বীকৃতি সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য, নাকি তা নবায়ন করতে হয়—এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, এই সনদের ভিত্তি দুটি—একটি হলো নতুন ভবন, আরেকটি বিদ্যমান ভবন। নতুন ভবনকে বলা হয় বিডি প্লাস সি, অর্থাৎ বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন বা ভবন উন্নয়ন ও নির্মাণ। এটা লিডের সব মানদণ্ড অনুসরণ করে তৈরি করা হয়। সেটা করা হলে আর পুনরায় সনদ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না; সারা জীবনই সেই কারখানাকে পরিবেশবান্ধব দাবি করা যাবে। তবে হালনাগাদ নীতিমালা আসে, কেউ চাইলে সেগুলো বাস্তবায়ন করে স্কোর বদলে নিতে পারে।

মহিউদ্দিন আরও বলেন, আরেকটি হলো লিড ও প্লাস এম—সেটা হলো কর্মপরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ। বিদ্যমান ভবনের ক্ষেত্রে এটি করতে হলে এই নীতিমালার আওতায় তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একাধিক মানদণ্ড আছে, সেগুলোর অধীন তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর পুনরায় সনদ নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে স্কোর বদলে যাওয়ার ঘটনাও আছে। প্যাসিফিক জিনসের একটি কারখানা নতুন সনদ নিয়ে গোল্ড থেকে প্লাটিনামে উন্নীত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত দেশের প্লাটিনাম বা সর্বোচ্চ মানের পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে ৮০টি কারখানা; গোল্ড মানের স্বীকৃতি পেয়েছে ১২০টি, সিলভার ১০টি ও সার্টিফায়েড স্বীকৃতি পেয়েছে ৪টি কারখানা।