শ্রমিক, ছাত্রসহ ২১০ জনের নিহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়ফাইল ছবি

সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৪ জন পোশাকশ্রমিক, দিনমজুর, ছাত্রসহ ২১০ জনের গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। একই সঙ্গে কিশোর হাসনাতুল ফায়েজের রিমান্ড, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচজন সমন্বয়ককে ডিবির হেফাজতে নেওয়া, নুরুল হক নুরসহ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অমানবিক নির্যাতনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস যৌথ বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

নেতারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের রেশ ধরে সারা দেশে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চলেছে, তা থেকে পোশাকশ্রমিক ও দিনমজুরেরাও রেহাই পাননি। প্রাণ হারিয়েছে ছাত্র ও ৪ থেকে ১০ বছরের শিশুরাও। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম হত্যাকাণ্ডের নজির নেই।

বাড্ডার পোশাকশ্রমিক ইয়ামিন চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক মো. রাসেল, ময়মনসিংহের পোশাকশ্রমিক মো. জামান মিয়া, সাভারের পোশাকশ্রমিক শুভ শীল, গাজীপুরের কাপাসিয়ার পোশাক কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন ১৯ জুলাই এবং শুভ শীল ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীকালে ৪ জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় এবং শুভ শীল সাভার এনাম মেডিকেল কলেজে মারা যান।

একই সঙ্গে সংগঠনটি পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবী এবং ছাত্র ও শিশুদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনটি মনে করে, সরকারকে এই হত্যার দায় নিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সব তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র–জনতার সঙ্গে পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যুর খবর শ্রমিকদের মনে গভীর ক্ষত ও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। সংগঠনটির নেতারা নিহত শ্রমিক, শ্রমজীবীসহ ছাত্র ও শিশুদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তাঁরা অবিলম্বে দেশের অর্থনীতির প্রাণ পোশাকশ্রমিক ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দাবি করেন।

ঢাকা কলেজের ছাত্র হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের (১৭) রিমান্ড এবং আন্দোলনকারী ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ডের নামে যে নির্মম নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তাঁরা আরও বলেন, কোটা সংন্কার আন্দোলন এখন কেবল কোটায় সীমাবদ্ধ নেই; এটি সারা দেশে গণতন্ত্রহীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতার প্রশ্ন সামনে এনেছে।