সিঙ্গাপুরের জাতীয় পুরস্কার পেলেন আজিজ খান

সিঙ্গাপুরের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কং মুহাম্মদ আজিজ খানের হাতে মেডেল তুলে দেন। আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর এক্সপোতে
ছবি: সামিট গ্রুপের সৌজন্যে

করোনা মহামারির সময় সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সিঙ্গাপুরের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। দেশটির সম্মানজনক ‘ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডসে’ পাবলিক সার্ভিস মেডেল (কোভিড-১৯) পেয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর এক্সপোতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁকে এ পদক দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কং মুহাম্মদ আজিজ খানের হাতে মেডেলটি তুলে দেন।

ঢাকায় সামিট গ্রুপ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, ২০২০ সালে করোনার প্রথম তরঙ্গের সময় সিঙ্গাপুরে ডরমিটরিতে আইসোলেশনে অবস্থানরত তরুণ প্রবাসীরা, বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেই সময় সিঙ্গাপুরের আইন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বানে আজিজ খান প্রায় ছয় হাজার বাংলাভাষী শ্রমিকের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহনের জন্য সিঙ্গাপুরের সিং-হেলথকে অর্থ সহায়তা দেন। পাশাপাশি তিনি এসব ডরমিটরিতে সশরীরে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।

সিঙ্গাপুরের জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর দেশটির সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুহাম্মদ আজিজ খান। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুর সরকার এ ধরনের পুরস্কারের মাধ্যমে সমাজে দায়িত্বশীলদের উৎসাহ দিচ্ছে। এই পুরস্কার আমাকে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বাত্মকভাবে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

করোনার সময়ের কথা স্মরণ করে আজিজ খান বলেন, ‘করোনায় অনেক ত্যাগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এই মহামারি আমাদের মানবিক হওয়ার পাশাপাশি সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার শিক্ষা দিয়েছে। সিঙ্গাপুরের নাগরিকেরা তখন বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি অসাধারণভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। তা না হলে অভিবাসী শ্রমিকেরা অবহেলিত হতে পারতেন।’

করোনার সময় ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধতা অনুভব করে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলে জানান আজিজ খান। তিনি বলেন, ‘আমার জন্মভূমি ও শিকড়ের টানে আমি সিং-হেলথের মাধ্যমে অভিবাসী শ্রমিকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার চেষ্টা করেছি। সেই সময় আমি বাংলাভাষী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলি।’ আর এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য তিনি সিঙ্গাপুরের আইন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাশীবিশ্বনাথন শানমুগামের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

করোনার সময় সিঙ্গাপুরের সংখ্যালঘুদেরও সহায়তা করেছিলেন জানান আজিজ খান। বলেন, ‘সংখ্যালঘুদেরও সহায়তা করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’

এদিকে করোনা মহামারির শুরুতেই মুহাম্মদ আজিজ খান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মহামারি পরিস্থিতি যত দিনই চলুক না কেন, সামিট তার কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি দিয়ে যাবে। মহামারির সময় সামিট গ্রুপ এবং আঞ্জুমান অ্যান্ড আজিজ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ দান করেছে।

সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীর তালিকায় আছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন সাময়িকী ‘ফোর্বস’ সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করে। তাতে আজিজ খান রয়েছেন ৪২ নম্বরে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার।

ফোর্বসের হিসাবে এবারই প্রথম আজিজ খান সিঙ্গাপুরের বিলিয়ন ডলার (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি) তথা শতকোটিপতি ক্লাবে ঢুকলেন। গত ২০২১ সালে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালের পর তাঁর সম্পদের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এর ফলে তিনি ফোর্বসের তালিকায় স্থান পান।