মোংলায় নিলামে উঠেছে ১৪৭ গাড়ি

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাড় না করায় আমদানি করা ১৪৭টি গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে তুলছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগামী ৫ জুন এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। বন্দর জেটিতে বিদেশি জাহাজের ডেকে রাখা আমদানি করা কয়েকটি গাড়ি। সাম্প্রতিক ছবি
প্রথম আলো

আমদানির পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড় না হওয়ায় বিভিন্ন মডেলের ১৪৭টি রিকন্ডিশন্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি নিলামে তুলছে মোংলা কাস্টমস হাউস। আগামী ৫ জুন এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।

কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও অনলাইনে নিলামে অংশ নেওয়া যাবে। ২৩ থেকে ২৫ মে নিলামে দরপত্র বিক্রি করা হয়। ৩১ মের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, খুলনা এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও মোংলা কাস্টম হাউসে রক্ষিত দরপত্র বাক্সে ১০ শতাংশ জামানতসহ দরপত্র জমা দিতে হবে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের। এ ছাড়া আগ্রহীদের ৩০ মে পর্যন্ত মোংলা বন্দরে গিয়ে নিলামে তোলা গাড়ি দেখার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

যেসব ব্র্যান্ড ও মডেলের গাড়ি নিলামে তোলা হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নিশান, পাজেরো, এক্সিও হাইব্রিড, পিয়ার্স হাইব্রিড, টয়োটা ভিজ, প্রোবক্স, অ্যাকুয়া হাইব্রিড, টয়োটা হাইব্রিড, করোলা ফিলডার, হায়েস ইত্যাদি।

জানতে চাইলে মোংলা কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা ছবি রাণী দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি করা এসব গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় করানোর নিয়ম থাকলেও সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকেরা তা করেননি। নির্দিষ্ট সময়ের পর আমদানিকারকদের আরও ১০ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েও তাঁরা গাড়ি ছাড় করেননি। এ কারণে নিয়মানুযায়ী পর্যায়ক্রমে নিলামে ওঠানো হচ্ছে এসব গাড়ি। নিলামের সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে গাড়ি বিক্রি করা হবে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সভাপতি হাবিবুল্লা ডন বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক মন্দা ও সরকারি সংস্থা এবং ব্যাংকগুলো গাড়ি ক্রয় করছে না। বড় বড় কোম্পানিগুলোও এখন গাড়ি কিনছে না। যে কারণে গাড়ির ব্যবসা ভালো চলছে না। এর মধ্যে কাস্টমসের নিলাম প্রক্রিয়া ব্যবসায়ীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। গাড়ি নিলামে না তুলে ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

যোগাযোগ করা হলে মোংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মাহফুজুর রহমান বলেন, নিলাম প্রক্রিয়া কাস্টম হাউসের একটি নিয়মিত কাজ। নিয়মিত নিলাম প্রক্রিয়া না থাকলে গাড়ি বা অন্যান্য পণ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের অসুবিধা হবে। তাই নিলাম প্রক্রিয়া চালু রাখতে হচ্ছে। এর ফলে সঠিক সময়ে সরকারের রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, মোংলা কাস্টমসের মোট আয়ের শতকরা ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ির বিপরীতে শুল্ক আদায় থেকে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার কুদরত আলী বলেন, ২০০৯ সালের ৩ জুন থেকে এ পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ২২ হাজার ৪৩৭টি জাপানি গাড়ি আমদানি হয়েছে, যা দেশে মোট আমদানি করা গাড়ির শতকরা ৬০ ভাগ। তিনি আরও বলেন, আমদানিকারকেরা সময়মতো ছাড় করালে বন্দরের শেডে গাড়ির জট তৈরি হতো না।