ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির জন্য চক্রায়ন অর্থনীতিই হবে মূল চাবিকাঠি
বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির জন্য সার্কুলার বা চক্রায়ন অর্থনীতিই হবে মূল চাবিকাঠি। এর মাধ্যমে উৎপাদন ও ভোগের মধ্যে সমন্বয় সাধন হয়। পণ্য ব্যবহারের পর বর্জ্য সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। এ ধরনের ব্যবসায়িক মডেল ক্রেতা ও উৎপাদক উভয়ের জন্যই সমান লাভজনক।
বাংলাদেশ সার্কুলার ইকোনমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)। লডস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সম্মেলনটি আয়োজনে অংশীদার হিসেবে ছিল পিফোরজি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, টেকসই উৎপাদনের জন্য থ্রি আর অর্থাৎ কাঁচামাল ব্যবহার হ্রাস, পুনঃ উৎপাদন ও পুনর্ব্যবহার হচ্ছে মূল চাবিকাঠি। পরিবেশদূষণ কমাতে ভোক্তা-পরবর্তী পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি পোশাকের দায়দায়িত্ব বাধ্যতামূলকভাবে উৎপাদকের নেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ফলে চক্রায়ন ফ্যাশনে গুরুত্বারোপ করলে বাড়াবাড়ি হবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত’ ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘প্রথাগত অর্থনীতিতে আমরা উৎপাদন করি, ভোগ করি ও ফেলে দিই। এটি কোনোভাবেই টেকসই ব্যবস্থা নয়। ফলে আমাদের যত দ্রুত সম্ভব চক্রায়ন অর্থনীতির দিকে যেতে হবে, যেন ব্যবহৃত পণ্য থেকে সর্বোচ্চ মূল্য আহরণ করা যায়।’
বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএমের হেড অব সাসটেইনিবিলিটি লিলা আর্ত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমাজের পাশাপাশি কোম্পানিগুলোও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তাই পোশাকশিল্পকে চক্রায়নে রূপান্তর করতে হবে। প্রাক্-ভোক্তা পর্যায়ে অর্থাৎ তৈরি পোশাকের উৎপাদনে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সৃষ্টি হয়, যা পুনর্ব্যবহার করা সম্ভব। এ জন্য বাংলাদেশের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তাফিজ উদ্দিন।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই সম্মেলন উপলক্ষে মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘চক্রায়ন অর্থনীতি হলো প্রথাগত অর্থনীতির একটি বিকল্প। প্রথাগত অর্থনীতি চলে রৈখিকভাবে, যেখানে আপনি পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করেন, ব্যবহার করেন এবং ফেলে দেন। অন্যদিকে সার্কুলার ইকোনমিতে আপনি সম্পদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ব্যবহার করেন এবং ব্যবহৃত পণ্য থেকে সর্বোচ্চ মূল্য সমপরিমাণ ভোগ করেন।’