ঘোড়াশাল সার কারখানা নির্মাণে খরচ বাড়ছে

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। যখন প্রকল্প পাস করা হয়, তখন খরচ ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। গত জুন মাসে চার বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন ব্যয় ৪৮ শতাংশ খরচ বাড়িয়ে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। কাহিনির প্রেক্ষাপট—ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রকল্প।

সাত কারণে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা খরচ বাড়িয়ে সংশোধন প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উঠছে।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় বিদ্যমান ইউরিয়া সার কারখানা ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের জায়গায় আরেকটি সার কারখানা স্থাপনের জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোগ নেওয়া হয়। দৈনিক ২ হাজার ৮০০ টন সার উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন গ্র্যানুলার ইউরিয়ার সার কারখানা নির্মাণের জন্য ১০ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়।

তখন এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এ প্রকল্পে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন, ব্যাংক অব টোকিও মিতসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড ও এইচএসবিসি অর্থায়ন করছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বিসিআইসি সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। এখন নতুন করে অনুষঙ্গ যোগ করে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

যে সাত কারণে প্রকল্পের খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ এবং মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো ঋণচুক্তি ও বাণিজ্যিক চুক্তিতে বিলম্ব হওয়া; বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের ২ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা প্রকল্পে খরচে অন্তর্ভুক্ত করা; শুল্ক-কর, রেলপথ স্থাপন, বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, আবাসিক ভবন নির্মাণ, রাসায়নিক পণ্য ও পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য গ্যাস কেনা; প্রকল্পের নতুন অঙ্গ হিসেবে ঠিকাদারকে আয়কর, সরকারি বিভিন্ন লাইসেন্স মাশুল, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেনা, নিরীক্ষা মাশুল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান সংযোজন; বিভিন্ন অর্থনৈতিক কোড হালনাগাদ করা; বিভিন্ন পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি ও কোভিড মহামারির কারণে কারখানাসংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিলম্ব হওয়া।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটানো; সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমদানিনির্ভরতা কমাতে প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংশোধন প্রস্তাব একনেকে পাঠানো হয়েছে।

ইতিমধ্যে ঘোড়াশালের দুটি সার কারখানা একীভূত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১ জুলাই ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (ইউএফএফএল) ও পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (পিইউএফএফএল) একীভূত করে ঘোড়াশাল পলাশ।