চামড়া পণ্যের স্থানীয় বাজারনির্ভর কারখানাও রপ্তানিতে প্রণোদনা পাবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গতকালের নির্দেশনায় বলা হয়, রপ্তানিমুখী কারখানার বাইরের প্রতিষ্ঠানও রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবে। 

ট্যানারি থেকে নিয়ে আসা প্রস্তুতকৃত চামড়া পর্যবেক্ষণ করছেন এক উদ্যোক্তাপ্রথম আলো ফাইল ছবি

রপ্তানিমুখী কারখানার বাইরে স্থানীয় বাজারনির্ভর চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন বিদেশে পণ্য রপ্তানি করলে তার বিপরীতে সরকারের নগদ সহায়তা পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সেখানে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকেও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নগদ সহায়তার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শতভাগ রপ্তানিমুখী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয় সরকার। 

জানা গেছে, এত দিন শুধু রপ্তানিমুখী চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নগদ সহায়তার আওতাভুক্ত ছিল। স্থানীয় কোনো কোম্পানি চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করলে তার বিপরীতে সরকারি কোনো প্রণোদনা পেত না। ফলে স্থানীয় কোম্পানিগুলো রপ্তানি করেও রপ্তানি সহায়তা বঞ্চিত হচ্ছিল। 

দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার–সংকট চলছে। এ সময় রপ্তানি আয়সহ ডলার আয় বাড়াতে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এতে স্থানীয় কোম্পানিগুলোও এখন রপ্তানি বাড়াতে আগ্রহী হবে। 

নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো পণ্য রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পেতে হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ী সমিতি বা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হতে হয়। সেই সঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বা ইপিবির সনদ লাগে। ইপিবির সনদ ও সমিতির সদস্যপদ ছাড়া রপ্তানিতে সরকারি প্রণোদনার অর্থ মেলে না। বর্তমানে দেশে চামড়া খাতের ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করলেও তার বিপরীতে নগদ সহায়তা পায় না। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠানের ইপিবির সনদ ও সমিতির সদস্যপদ নেই। 

চামড়াজাত পণ্যের একাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইপিবির কাছ থেকে রপ্তানি পণ্যের সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি কিছুটা কঠিন। এ সনদ পেতে হলে উন্নত কর্মপরিবেশসহ অনেক ধরনের শর্ত পূরণ করতে হয়। এ ছাড়া সমিতির সদস্যপদ পেতে এককালীন ও বার্ষিক বড় অঙ্কের চাঁদা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ দুই কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করলেও শুরুতে ইপিবির সব শর্ত পূরণ করতে পারে না বলে রপ্তানির সনদও পাই না। ফলে রপ্তানির বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলো সনদ সহায়তা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিকারক দেশীয় এক প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ইপিবির সনদ প্রাপ্তির জন্য কারখানাসহ পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধিতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হয়, শুরুতে সেই সক্ষমতা অনেক ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারই থাকে না।