শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে অর্থনীতিতে গতি ফিরবে: এফবিসিসিআই
বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা গেলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে অর্থনীতিতে গতিশীলতা ফিরে আসবে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তাতে ব্যবসায়ী সমাজ আশান্বিত।
এফবিসিসিআইয়ের (বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন) গুলশান কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পকারখানার নিরাপত্তাবিষয়ক সমন্বয় সভায় এসব বলেন সংগঠনটির সভাপতি মাহবুবুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. মঈন খান। এফবিসিসিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক দুই সভাপতি মীর নাসির হোসেন ও মো. জসিম উদ্দিন; বর্তমান জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন; মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান; তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি মিরান আলী; বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল; গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন প্রমুখ।
মেজর জেনারেল মো. মঈন খান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তা দিতে না পারলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। এ জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের নিরাপত্তা প্রদান করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কর্তব্য। কোনো ব্যবসায়ী কিংবা শিল্পপ্রতিষ্ঠান চাঁদাবাজিসহ হামলার হুমকি পেলে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার–জট কমানো ও অনিয়ম দূর করতে সেনাবাহিনী গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান মো. মঈন খান।
শিল্প পুলিশের ডিআইজি মো. আজাদ মিয়া বলেন, শিল্পকারখানার সুরক্ষায় ইতিমধ্যে শিল্প পুলিশের অধিকাংশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন। শিগগিরই বাকি সদস্যরা যোগ দেবেন। তা ছাড়া বেশির ভাগ শিল্পকারখানায় শ্রমিকের উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশে সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতা থাকলে বিনিয়োগ হবে না। তাই সবার আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হবে। এ কাজে ব্যবসায়ীরা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীর অনেক থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে। পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে পুলিশ সদস্যদের একাংশ। এমন প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার অভাবে শিল্পকারখানা চালু করতে সাহস পাচ্ছিলেন না অনেক মালিক। অর্থনীতির চাকা সচল করতে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করে শিল্পকারখানা, বিপণিবিতান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেন।