বিজিএমইএর নির্বাচনে কে কত ভোট পেলেন

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ২০২৪–২৬ সালে মেয়াদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। এই প্যানেলের ৩৫ জন প্রার্থীর সবাই জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার ২৬ ও চট্টগ্রামের ৯ জন। তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫১০ ভোট পেয়েছেন প্যানেল লিডার বা দলনেতা এস এম মান্নান। বাকি ৩৪ জন ১ হাজার ১৯৭ বা তার চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন।

সংগঠনটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অপর প্যানেল ফোরামের দলনেতা ফয়সাল সামাদসহ কেউই জয়ী হতে পারেননি। দলনেতা ভোট পেয়েছেন ৮৬৬টি। ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীদের ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে তিনি ২৯তম অবস্থানে আছেন। সর্বশেষ ২০২১ সালের নির্বাচনেও ফোরামের দলনেতা এ বি এম সামসুদ্দিন হেরেছিলেন। যদিও ওই বছর ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ফোরাম ১১টিতে জয়ী হয়েছিল। বাকি ২৪টি পদে জয়ী হওয়ার সুবাদে সম্মিলিত পরিষদ বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে।  

বিজিএমইএর আগামী নেতৃত্ব নির্বাচনে গতকাল শনিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে ভোট গ্রহণ হয়। নির্বাচনে ২ হাজার ৪৯৬ জন ভোটারের মধ্যে ৮৯ শতাংশ বা ২ হাজার ২২৬ জন ভোট দেন। ঢাকায় ২ হাজার ৩২ জন ভোটারের মধ্যে ৯০ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ৪৬৪ ভোটারের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৪০ শতাংশ ভোট দেন। ভোট গণনা শেষে শনিবার মধ্যরাতে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন বোর্ড ফলাফল ঘোষণা করে।

বিজিএমইএর এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৮৬ ভোট পেয়েছেন ক্লাসিক ফ্যাশনের কনসেপ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহিদউল্লাহ আজিম। এরপর উর্মি গার্মেন্টসের এমডি আসিফ আশরাফ ১,৪৪৯; টিম গ্রুপের এমডি আবদুল্লাহ হিল রাকিব ১,৪৩৬; লায়লা স্টাইলের এমডি মো. ইমরানূর রহমান ১,৪১২; তুসুকা ফ্যাশনসের চেয়ারম্যান আরশাদ জামাল ১,৪১৭; বিটপি গ্রুপের এমডি মিরান আলী ১,৩৯২; স্প্যারো গ্রুপের এমডি শোভন ইসলাম ১,৩৮৭; টিআরজেড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির এমডি হারুন অর রশীদ ১,১৬৭; শিন শিন অ্যাপারেলসের এমডি মোহাম্মদ সোহেল সাদাত ১,৩৪৩; মেসিস গার্মেন্টসের পরিচালক মো. আশিকুর রহমান ১,৩৪১; টেক্স টাউনের এমডি আনোয়ার হোসেন ১,৩৩৭ ভোট পেয়েছেন।

উইন্ডি অ্যাপারেলসের এমডি মেসবাহ উদ্দিন খান ১,৩৩৩; শাশা গার্মেন্টসের এমডি শামস মাহমুদ ১,৩৩২; ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যারের এমডি খন্দকার রফিকুল ইসলাম ১,৩৩১; সাদমা ফ্যাশনওয়্যারের এমডি মো. নাসির উদ্দিন ১,৩৩০; ইয়ং ফোরএভার টেক্সটাইলের এমডি রাজীভ চৌধুরী ১,৩২৭; সায়েম ফ্যাশনের পরিচালক আবরার হোসেন ১,৩১৭; ফোরর্টিজ গার্মেন্টসের এমডি শাহদাৎ হোসেন ১,৩০৪; কাউজার নিটওয়্যারের এমডি জাকির হোসেন ১,২৯৯; মমসন সার্ভিস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি নুসরাত বারী ১,২৯৭; ডেনিম এক্সপার্টের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল ১,২৮৩; এনভয় ডিজাইনের পরিচালক শেহরিন সালাম ১,২৫৭; নিউটেক্স ডিজাইনের পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম ১,২৪৭; টিএমএস ফ্যাশনের এমডি সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী ১,২০৪ এবং গালপেক্সের এমডি মো. রেজাউল আলম ১১৯৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন।

চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী এইচকেসি অ্যাপারেলসের রাকিবুল আলম চৌধুরী সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া ওয়েল গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১,৪০৫; মদিনা গার্মেন্টসের এমডি মোহাম্মদ মুসা ১,৩৭১; হাই ফ্যাশনের এমডি আমজাদ হোসেন চৌধুরী ১,৩৬০; আমহেকো ফেব্রিকসের এমডি এম আহসানুল হক ১,৩৫২; আরডিএম অ্যাপারেলসের এমডি মোস্তফা সারওয়ার ১,৩৩২; আর্জেন্টা গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মোহাম্মদ রাকিব আল নাসের ১,৩২১; সোনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক গাজী মো. শাহীদ উল্লাহ ১,২৮১ এবং টপ স্টার ফ্যাশনের এমডি মো. আবসার হোসেন ১,২৫৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

অন্যদিকে ফোরামের ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬ ভোট পেয়েছেন ইভিন্স গ্রুপের পরিচালক শাহ রায়ীদ চৌধুরী। ফোরাম থেকে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া এই প্রার্থী ঢাকায় সম্মিলিত পরিষদের ২৬তম বিজয়ীর চেয়ে ১৯১ ভোট কম পেয়েছেন। ফোরামের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৬৬ ভোট পান ফেব্রিকা নিট কম্পোজিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান। আর তৃতীয় সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন প্যানেলটির নেতা ফয়সাল সামাদ।

এ ছাড়া ফোরামের আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে এশিয়ান অ্যাপারেলসের এমডি মোহাম্মদ আবদুস সালাম ৮৩৯, দেশ গার্মেন্টসের পরিচালক ভিদিয়া অমৃত খান ৮১৪, নিউ এইজ গ্রুপের এমডি আসিফ ইব্রাহিম ৮০২, অনন্ত কোম্পানিজের এমডি এনামুল হক খান ৭৬৭, ফোর উইংসের পরিচালক ওসামা তাসীর ৬৬৩ এবং কিউট ড্রেসের এমডি শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ ৬২২ ভোট পেয়েছেন। এই প্যানেল থেকে সর্বনিম্ন ৪৯৬ ভোট পেয়েছেন জিনস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের এমডি শারেক রহিম। আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে ফোরামের প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৯৪ ভোট পেয়েছেন কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান।

সবগুলো পদে নিরঙ্কুশ জয়ের ফলে সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা এস এম মান্নান হতে যাচ্ছেন বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি। তবে সাত সহসভাপতি পদে কারা আসছেন, সেটি জানতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। সভাপতি ও সহসভাপতি পদে ভোট হবে ২৩ মার্চ।