প্রথম আলো: আপনারা এখন কি দেশে ফ্রিজ উৎপাদন করছেন? এবারের বাজেটে আপনাদের জন্য নতুন কোনো সুবিধা কি দেওয়া হয়েছে?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: শুরুতেই একটি বিষয় জানিয়ে রাখি, বাংলাদেশে আইসিটি পণ্য বাজারজাতকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলোজিস (বিডি) লিমিটেড। বিশ্বের প্রায় ৮৫টি ব্র্যান্ডের আইসিটি পণ্য বাজারজাত করছি আমরা। এ ক্ষেত্রে আমাদের অন্যতম সহযোগী জাপানের সনি করপোরেশন। দেশের বাজারে জাপানের বহুজাতিক শিল্পগোষ্ঠী সনি করপোরেশনের ইলেকট্রনিকস পণ্য ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিষেবা বিক্রি করতে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে স্মার্ট টেকনোলোজি (বিডি) লিমিটেড। সনি-স্মার্ট নামেই আমরা এখন পরিচিত। একই সঙ্গে আমরা জাপানের আরেক বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড শার্পের পণ্যও সরবরাহ করছি।
আশার বিষয় হলো দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে অনেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্পকারখানা স্থাপনে উদ্যোগী হচ্ছেন। তবে এ খাতের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য ভ্যাট ও কর অবকাশ-সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ালে উদ্যোক্তারা বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি বেশ উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর উৎপাদন খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের সুদহার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্যও অনুরোধ করছি।
প্রথম আলো: বছরের কোন সময়ে (মৌসুম) ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর বেশি বিক্রি হয়? তখন কী পরিমাণে বিক্রি হয়?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: বছরে কয়েকটি উৎসবের সময়, বিশেষ করে ঈদুল ফিতর ও কোরবানির ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর। এ মুহূর্তে দেশে বছরে ফ্রিজের চাহিদা প্রায় ২৫ লাখের মতো। এর মধ্যে বেশির ভাগ ফ্রিজ দেশেই উৎপাদিত হয়, বাকিগুলো আমদানি হয়। এই যেমন আমাদের দেশে তৈরি স্মার্ট ব্র্যান্ডের নিজস্ব ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর আছে; একই সঙ্গে আমরা জাপানের বিশ্বখ্যাত শার্প ব্র্যান্ডের ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটরও বাজারজাত করছি। আশা করছি, গ্রাহকেরা বাজারের অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে তুলনা করেই ভালো পণ্য হিসেবে সনি-স্মার্ট থেকে ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর বেছে নিতে পারবেন।
প্রথম আলো: আপনাদের ফ্রিজ ও ফ্রিজারে কী কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: প্রথমত, আমাদের ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর পছন্দ করার মূল কারণ হচ্ছে, আমরা গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন আকার এবং রং ও বাহারি নকশার ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর বাজারে এনেছি। আমাদের ফ্রিজের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। যেমন ফাস্ট কুলিং, টেম্পারড গ্লাস, ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী, ১০০ শতাংশ কপার কনডেনসার, পরিবেশবান্ধব, কম ভোল্টেজেও চালু থাকা, ১০ বছরের কম্প্রেসর ওয়ারেন্টি ও ইনসাইড ভিনাইল বডি।
প্রথম আলো: নতুন আরও কী কী ধরনের প্রযুক্তি সামনের দিনগুলোয় যুক্ত হবে?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: আমাদের দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হওয়ার পথে রয়েছে। আমরা স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের পক্ষ থেকে দেশে আইসিটি পণ্যের বাজার বিকাশে যেমন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি, তেমনি আমরা ইলেকট্রনিকস পণ্য বিশেষ করে ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটরের বাজার সম্প্রসারণেও সামনের সারিতে থাকতে চাই। সে জন্য আমরা সব সময় সর্বাধুনিক ও স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাই। আমরা স্মার্ট পণ্য তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছি। শিগগিরই আমরা জি-টেক ইনভার্টেড টেকনোলজি ব্যবহার করে ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর প্রস্তুত ও বাজারজাত করতে যাচ্ছি। ফলে আমাদের ফ্রিজ আরও বেশি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হবে এবং গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী অসংখ্য নান্দনিক ডিজাইনের ফ্রিজ বানাতে পারব।
প্রথম আলো: সর্বনিম্ন কত থেকে সর্বোচ্চ কত দাম পর্যন্ত ফ্রিজ ও ফ্রিজার আছে?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: দেশে উৎপাদিত স্মার্ট ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি আমদানি করা বিশ্বখ্যাত শার্প ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর সরবরাহ করছি আমরা। আমাদের ফ্রিজের সর্বনিম্ন দাম ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত।
প্রথম আলো: ফ্রিজ কেনার ক্ষেত্রে কিস্তিসহ কী কী সুবিধা আছে? ওয়ারেন্টিসহ আরও কী কী ধরনের সুবিধা আছে? বিক্রয়–পরবর্তী সেবা কেমন?
সারোয়ার জাহান চৌধুরী: ঈদ উপলক্ষে আমরা দিচ্ছি বিনা সুদে ইএমআই–সুবিধা, প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে ১০০ ভাগ নিশ্চিত উপহার, প্রকৃত সেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্ড এবং জিপি স্টার কাস্টমারদের জন্য ২৬ শতাংশ ক্যাশব্যাক–সুবিধা। এ ছাড়া বিক্রয়োত্তর সেবার কথা যদি বলেন, সেটাই সনি-স্মার্টকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে। সনি-স্মার্টের প্রতি গ্রাহকদের আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, আমাদের জেনুইন-ফাইভ (জি-৫) পলিসি। অর্থাৎ আমরা জেনুইন প্রাইসে বা প্রকৃত মূল্যে গ্রাহকদের জেনুইন বা প্রকৃত পণ্য ও প্রকৃত সেবা দিয়ে থাকি। একই সঙ্গে বিক্রয়োত্তর সেবায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে জেনুইন প্যাশনের সঙ্গে জেনুইন কেয়ার নিশ্চিত করে থাকি।