সরাসরি রপ্তানির মতো প্রচ্ছন্ন রপ্তানিতেও সমান সুযোগ চায় বিজিএপিএমইএ
সরাসরি রপ্তানি খাতের মতো প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের জন্যও সমান সুযোগ চায় তৈরি পোশাকশিল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য সরবরাহকারী কারখানামালিকদের সংগঠন বিজিএপিএমইএ।
বাণিজ্য সংগঠনটির নেতারা বলছেন, পণ্য রপ্তানিতে ৮৫ শতাংশ অবদান রাখা তৈরি পোশাকশিল্পে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য স্বল্প সময়ে সরবরাহ করে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে অনেক অবদান রাখছে এই উপখাত। কিন্তু তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা প্রণোদনা পেলেও সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্যের সরবরাহকারী বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকেরা কখনোই তা পাননি। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেটে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের নগদ সহায়তা প্রদানের ঘোষণা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আগামী ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের নগদ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি সেটি বাস্তবায়নের দাবি জানান তাঁরা।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন বিজিএপিএমইএর নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএপিএমইএর সাবেক সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী ও আবদুল কাদের খান, বর্তমান পর্ষদের সহসভাপতি মোজাহারুল হক, পরিচালক কাজী ফাহাদ, জামিল আহমেদ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য উপখাতের সরাসরি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ৮০০-৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। তার মধ্যে সরাসরি রপ্তানি হয় ১৫০ কোটি ডলারের সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য। এ ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা দাবি করেন তিনি।
মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটকে আমরা জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব বলব কি না, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে আছি। কারণ, মূল্যস্ফীতি কম থাকলে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রসারের সুযোগ-সুবিধা পান। তবে এসব উদ্দেশ্য অর্জনে বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে করহার বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে, সেখানে অপ্রদর্শিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে আমরা অযৌক্তিক মনে করছি।’
আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রি-ফেব্রিকেটেড ভবন নির্মাণের উপকরণ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ, জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, নতুন বন্ড লাইসেন্সের ফি ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা এবং বন্ড লাইসেন্সের বার্ষিক নবায়ন ফি ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে এসব সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিজিএপিএমইএর সভাপতি বলেন, শিল্পাঞ্চলের বাইরে গ্যাস, বিদ্যুৎ–সংযোগ ও ব্যাংকঋণ প্রদান না করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।
বিজিএপিএমইএর সাবেক সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, ‘যাঁরা কর দিচ্ছেন তাঁদের ওপর আরও বোঝা চাপানো হয়েছে। কর নিরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর আবারও ফাইল খোলা হচ্ছে। কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোড এদিক–সেদিক হলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ২০০-৪০০ শতাংশ জরিমানা করা হচ্ছে। এভাবে আতঙ্ক নিয়ে শিল্প চালাতে হলে সেটি আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। নীতি এমনভাবে করা উচিত যাতে করে নতুন প্রজন্ম ব্যবসা করতে আগ্রহী হয়।’
রাফেজ আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘নীতি প্রণয়নকারীরা মনে করেন সব ঠিকঠাকভাবে চলছে। সহায়তার কী দরকার। আমরা সহায়তা নয়, সবকিছু যুক্তিসংগত করার দাবি জানাই।’