রপ্তানি বন্ধের পথে, ছাঁটাই আতঙ্কে আকিজ জুট মিলসের কর্মীরা

দেশের বেসরকারি খাতে বৃহত্তম পাটকল আকিজ জুট মিলসের পাটজাত পণ্য রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নেমেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন পাটকলটির মালিক ও শ্রমিকেরা। রপ্তানি কমে যাওয়ায় এ পাটকলের স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় সাত হাজার কর্মী চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।

ইতিমধ্যে পাটকলটির শ্রমিকদের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা-নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ২৩টি বাস চলাচল গতকাল (১৫ নভেম্বর) থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দূরদূরান্তের শ্রমিকেরা এখন আর যশোরের নওয়াপাড়া শহরে প্রতিষ্ঠিত এ পাটকলে কাজে যোগ দিতে পারছেন না। এতে পাটকলের অধিকাংশ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

বিদেশি ক্রয়াদেশ না থাকা এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে কারখানাটি পুরোপুরি সচল রাখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।

আকিজ জুট মিলস সূত্রে জানা গেছে, এই পাটকলে তিন পালায় যশোরের কেশবপুর, মনিরামপুর, খুলনার ফুলতলা ও নড়াইলের বিভিন্ন উপজেলার প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শ্রমিক দৈনিক হাজিরা চুক্তিতে নিয়মিত কাজ করেন। প্রতিদিন ২৩টি বাসের মাধ্যমে এসব শ্রমিককে কারখানায় আনা-নেওয়া করা হয়। গত ১৫ নভেম্বর থেকে আকস্মিকভাবে বাসসেবা বন্ধ করে দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। এতে মিল এলাকার আশপাশে বসবাসকারী স্থায়ী কর্মীদের প্রায় ৭০০ জন ও কিছু অস্থায়ী শ্রমিক কাজে যোগ দিলেও দূরদূরান্তের শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না।

জানতে চাইলে আকিজ জুট মিলসের নির্বাহী পরিচালক শেখ আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পাটকলে মাসে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন পাটের বস্তা ও সুতা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে মাসে প্রায় ১০ হাজার টন পাটজাত পণ্য বিশ্বের ৪০টি দেশে রপ্তানি হয়েছে। এখন সেই রপ্তানি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। বর্তমানে যে কার্যাদেশ রয়েছে এবং সেগুলোর যে দাম, তাতে বিক্রয়মূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি। ফলে লোকসানে ওই সব কার্যাদেশের পণ্য রপ্তানিও করা যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের আনা-নেওয়া জন্য ২৩টি বাস চলাচল করত। সেগুলো বন্ধ করা হলেও শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়নি। পাটকলের আশপাশের শ্রমিকদের যাঁরা নিজস্ব ব্যবস্থায় যাতায়াত করতে পারছে, তারা কাজ করছে। তবে এভাবে ভর্তুকি দিয়ে কত দিন মিল সচল রাখা যাবে, তা বুঝতে পারছি না।’

শেখ আবদুল হাকিম জানান, মিলের শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পাওনা পরিশোধ করে দেওয়া হয়। কোনো শ্রমিকের কোনো পাওনা এখন পর্যন্ত বকেয়া নেই।