আধুনিক ফ্রিজ যেভাবে এল
বিশেষজ্ঞরা যতই বলুক, ঘেমেনেয়ে বাইরে থেকে ঘরে ফিরে সঙ্গে সঙ্গেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাবেন না। কিন্তু এ কথা কয়জন মানেন! সে কথা ভাবতে ভাবতেই ফ্রিজ থেকে বের করে ঢকঢক করে এক বোতল পানি হয়তো ততক্ষণে শেষ। এই ঠান্ডা পানি বা খাবার দিনের পর দিন সংরক্ষণ করতে এখন আর কষ্ট করতে হয় না। হাতের নাগালেই সবকিছু। মন চাইলে মধ্যরাতেও ফ্রিজে একটু উঁকি দেওয়া যায়।
ঘরের এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি আবিষ্কার, চাহিদা বা কে-ইবা প্রথম তৈরি করেছিলেন, তা নিয়ে নানা মত ও নানাজনের নাম সামনে আসে।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় বলা হয়েছে, গ্রিক-রোমানরাসহ প্রাচীন জনগোষ্ঠী পাহাড় থেকে বরফ এনে তাদের খাবার সংরক্ষণ করে রাখত। ধনীরা অবশ্য তুষার সেলার তৈরি করত। মাটি খুঁড়ে তাতে কাঠ এবং খড় দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় বরফ সংরক্ষণ করে রাখা হতো।
ফ্রিজ ধারণাটির উদ্ভাবক হিসেবে একাধিক ব্যক্তির নাম এলেও মোটামুটি সবাই স্কটিশ পদার্থবিদ উইলিয়াম কুলিনকে কৃতিত্ব দিয়েছে। উইলিয়াম কুলিন ১৭৪৮ সালে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কৃত্রিম রেফ্রিজারেশন প্রদর্শন করেন।
২০০১ সালের মার্চে প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রকৌশলী টমাস মুর ১৮০৩ সালে রেফ্রিজারেটর শব্দটি পেটেন্ট করে নেন। তিনি জর্জটাউন বাজারে ফ্রিজে করে মাখন নিয়ে যেতেন। তাঁর ফ্রিজটি ছিল ডিম্বাকৃতির একটি কাঠের কনটেইনার। যার বাইরে আরও কনটেইনার ছিল। এই দুই কনটেইনারের মধ্যে তিনি বরফ রাখতেন। এতে তার মাখনগুলো তাজা থাকত।
বাষ্প সংকোচন পদ্ধতির আধুনিক যান্ত্রিক ফ্রিজের উদ্ভাবক হিসেবে কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। অলিভার ইভানস, জ্যাকব পারকিনসের নাম উল্লেখযোগ্য। ফ্রিজের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয় বিশ শতকের দিকে। তখন বিয়ার তৈরির প্রক্রিয়া ও মাংস প্যাকেটজাত করার জন্য ফ্রিজের ব্যবহার বেড়ে যায়।
প্রথম বৈদ্যুতিক ফ্রিজের উদ্ভাবক হিসেবে মার্কিন প্রকৌশলী ফ্রেড ডব্লিউ উলফের নাম জানা যায়। ওয়ার্লপুলের সাইটে বলা আছে, তিনি ১৯১৩ সালে সাধারণ মানুষের ব্যবহারযোগ্য প্রথম বৈদ্যুতিক ফ্রিজ তৈরি করেন।
ঘরে ব্যবহারের জন্য ফ্রিজের ব্যাপকহারে উৎপাদন শুরু হয় ১৯১৮ সালের দিকে। যখন উইলিয়াম সি ডুরান্ট একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্প্রেসরসহ রেফ্রিজারেটর আনেন।