দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ২০২৩-২৫ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩ পদের মধ্যে ১৫টিতে জয়ী হয়েছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ প্যানেল। আর ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেল পেয়েছে ৮টি পদ।
ভোট গণনা শেষে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় ফলাফল ঘোষণা করেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড। এতে দেখা যায়, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ প্যানেলের প্রথম সাত প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মো. এনায়েত উল্লাহ। এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এবারের নির্বাচনেও মূল প্যানেল ছিল দুটি। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩ পদের জন্য সমানসংখ্যক প্রার্থী দেয় ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তার বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীও ছিলেন তিনজন।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের বর্তমান সভাপতি মাহবুবুল আলম। পরবর্তী সভাপতি হওয়ার জন্য সরকারের উচ্চ মহলের সবুজ সংকেত তিনি পেয়েছেন। তা ছাড়া এফবিসিসিআইয়ের সাবেক কয়েকজন সভাপতি ও শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা এই প্যানেলের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। আর তাতেই গতকালের ভোটের আগেই সমঝোতায় নির্বাচিত ও মনোনীত ৫৫ পরিচালক এই প্যানেলের পক্ষের। তার মধ্যে ইতিমধ্যে মাহবুবুল আলম চেম্বার গ্রুপ থেকে মনোনীত পরিচালক হয়েছেন।
অন্যদিকে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ। যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আছেন মুনতাকিম আশরাফ ও নিজাম উদ্দিন রাজেশ। এই প্যানেলের প্রতি সমর্থন আছে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের।
নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্যে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ ১ হাজার ২৯৪টি, বি এম শোয়েব ১ হাজার ২৭৯, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ ১ হাজার ২৫৭, সিরাজুল ইসলাম ১ হাজার ২৪৬, মো. সহিদুল হক মোল্যা ১ হাজার ২১৫, নিজাম উদ্দিন রাজেশ ১ হাজার ১৯১, মো. মুনতাকিম আশরাফ ১ হাজার ১৭৫, রাকিবুল আলম ৯৯২, মোহাম্মদ আফতাব জাভেদ ৯৬৬, মো. ইসহাকুল হোসেন ৮৯১, আমির হোসেন নূরানী ৮৫২, সৈয়দ মো. বখতিয়ার ৮৪০, তপন কুমার মজুমদার ৮৩৫, সালমা হোসেন ৮৩১ এবং মো. আবুল হাশেম ৮১৫টি ভোট পেয়ে পরিচালক নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্যে কাওসার আহমেদ ১ হাজার ৩০টি, খন্দকার রুহুল আমিন ৯৮৮, মো. আমিন হেলালী ৯১১, মো. নিয়াজ আলী চিশতী ৯০৯, আবু মোতালেব ৮৯৯, শমী কায়সার ৮৫২, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী ৮৩৭ এবং হাফেজ হারুন পেয়েছেন ৮১৩টি ভোট।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিকে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম। দুপুরের পর ভোটারদের চাপ বাড়ে। বিকেল সাড়ে চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়।
ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৯৯০ জন ভোটার হলেও শেষ পর্যন্ত বৈধ ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫৪। তার মধ্যে ১ হাজার ৭৪৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন, শতকরা হিসাবে যা ৮৯ দশমিক ৩৫।
এবার অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ভোট হলেও চেম্বার গ্রুপের ২৩ পদের জন্য শুধু ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। আর চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৩৪ জন মনোনীত পরিচালক পদের বিপরীতে বৈধ প্রার্থী আছেন ৩২ জন। দুটি পদ ফাঁকা রয়েছে। সব মিলিয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক পদের সংখ্যা ৮০।
চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৯৯০ জন ভোটার হলেও শেষ পর্যন্ত বৈধ ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫৪। তার মধ্যে ১ হাজার ৭৪৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন, শতকরা হিসাবে যা ৮৯ দশমিক ৩৫।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদ নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ভোট হয়েছিল। সেবার ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৯৮। তার মধ্যে ৮৮ শতাংশ বা ১ হাজার ৬৬৯ জন ভোট দেন; যদিও ৩২টি ভোট বাতিল হয়েছিল। সেই হিসাবে এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে বেশি।