বিক্রি বেড়েছে, খুশি ব্যবসায়ীরা

দেশের পোশাকের বড় ব্র্যান্ডগুলো জানিয়েছে, আগের বছরের চেয়ে তাদের ব্যবসা ১৫–৬০ শতাংশ বেড়েছে।

এবার দুর্গাপূজায় গত বছরের চেয়ে ভালো বিক্রি হয়েছে। আর তাতে খুশি ব্যবসায়ীরা। গতকাল শনিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হলেও এদিন রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে শেষ মুহূর্তের বিক্রি ছিল জমজমাট। ব্যবসায়ী বলছেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে গত বছর দুর্গাপূজায় ব্যবসা কিছুটা জমেছিল। এবার সেই গতি আরও বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, পূজাকে কেন্দ্র করে এবার ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি ছিল ভালো। নতুন নতুন নকশার কাপড়চোপড় তুলেছে ব্র্যান্ডগুলো। ক্রেতা টানতে ছিল বিশেষ মূল্যছাড়। এতে গত বছরের তুলনায় ১৫ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিক্রি বেড়েছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলোর।

বড় ব্র্যান্ড ছাড়া ছোটরা কমবেশি ভালো ব্যবসা করেছেন বলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। কারও কারও বিক্রি গত কয়েক বছরের বিক্রিকে ছাড়িয়ে গেছে। তাতে পূজাকেন্দ্রিক ব্যবসা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

গত দুই দিনে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি ও মিরপুর এলাকার বেশ কয়েকটি বিপণিবিতান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। বিক্রেতারা জানান, এবারের পূজায় শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ,পায়জামা-পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, জুতা ইত্যাদি বেশি বিক্রি হয়েছে। এসব ছাড়া জুয়েলারি পণ্য ও বিভিন্ন উপহারসামগ্রী কেনার প্রতিও ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা গেছে।

পূজা উপলক্ষে ৩০ ধরনের নকশা করা নতুন পোশাক এনেছে ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স। এ ছাড়া পরিবারের সব সদস্যের জন্য একই ধরনের পোশাকের বিশেষ আটটি প্যাকেজ এনেছে ব্র্যান্ডটি। জানতে চাইলে অঞ্জনসের বসুন্ধরা সিটি শাখার ব্যবস্থাপক মো. কাওছার আহমেদ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেয়েছি। পূজা সামনে রেখে যেসব পোশাক আনা হয়েছিল, তার প্রায় সবই বিক্রি হয়ে গেছে।’

দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড আড়ংয়ের বসুন্ধরা সিটির এক বিক্রয়কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পূজা উপলক্ষে তাঁদের শাড়ি, ধুতি ও পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি জুয়েলারি পণ্য ও উপহারসামগ্রীও ভালো বিক্রি হয়েছে।

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের পূজার বিক্রির চেয়ে এ বছর বিক্রি ১৫ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সেই তথ্যের সত্যতা মেলে পোশাকের ব্র্যান্ড দর্জিবাড়ির মহাব্যবস্থাপক এস এস সুমনের কথায়ও।

তিনি জানান, এ বছর তাঁদের লক্ষ্যের চেয়ে ৭০ শতাংশের বেশি বিক্রি হয়েছে। আর গত বছরের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে ৬০ শতাংশ। জেন্টেল পার্কের মিরপুর-১০ শাখার ব্যবস্থাপক শামীম সরকার জানান, দেশজুড়ে তাঁদের ৪৯টি বিক্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টিই পূজায় বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছে। আর গত মৌসুমের তুলনায় তাঁদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশের বেশি।

পোশাকের পাশাপাশি পূজায় জুতার বিক্রিও বেশ ভালো হয়েছে। পূজা উপলক্ষে প্রায় ৮০টি নতুন নকশার জুতা বাজারে এনেছে দেশের শীর্ষ জুতার ব্র্যান্ড অ্যাপেক্স। কোম্পানিটির বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের শাখা ব্যবস্থাপক মো. শামীম শেখ বলেন, গত বছরের পূজার সময়ের তুলনায় এবার ১৫ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়েছে।

তবে বিক্রি আশানুরূপ না হওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ। পোশাকের ব্র্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর মিরপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ জানান, গত বছরের তুলনায় বিক্রি বাড়েনি তাঁদের।