ডলারের দরে অনিশ্চয়তায় ব্যবসা চালানো কঠিন

ফারুক আহমেদ, কর্ণধার, ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, খাতুনগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

মসলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কখনো এখনকার মতো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। বিশেষ করে ডলার নিয়ে অনিশ্চয়তায় ব্যবসা চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। ডলারের দর কাল কত হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে খরচ কত হবে, বাজারে দাম পাওয়া যাবে কি না, বিক্রি করে ব্যাংকের টাকা শোধ করা যাবে কি না—তার হিসাব মেলানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আমদানি কমিয়ে ফেলতে হচ্ছে।

একটা উদাহরণ দিই। প্রায় ২০ দিন আগে ২৫ হাজার ডলার মূল্যের মসলার ছোট একটি চালানের ঋণপত্র খুলেছিলাম। ঋণপত্র খোলার সময় ৯৬ টাকা ছিল ডলারের দর। চীন থেকে মসলার চালানটি আসার পর গত রোববার ১০২ টাকা দরে ডলারের দর শোধ করতে হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র এক মাসের কম সময়ে ডলারের বিনিময়মূল্য বেশি দিতে হয়েছে ছয় টাকা।

এ তো গেল ডলারের দামে অস্থিরতা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আগস্ট মাসের ডলারের নতুন বিনিময় হার প্রকাশ করেছে। তাতে আগস্ট মাসে ডলারপ্রতি বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৩ টাকা ৪০ পয়সা। জুন মাসেও এই বিনিময় হার ছিল ৮৬ টাকা ৭৩ পয়সা। বিনিময় হার বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যের এবার শুল্ক-করও বাড়তি দিতে হবে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা, আদা, রসুন আমদানিতে ১০ শতাংশ মার্জিন দিয়ে ঋণপত্র খোলা যায়। তবে মিষ্টি জিরা, লবঙ্গ, গোলমরিচ ও খেজুরের মতো পণ্যের ঋণপত্র খুলতে এখন ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ মার্জিন দিতে হচ্ছে। এত বিপুল বিনিয়োগ করে ব্যবসা চালানো কঠিন।

মসলা ও ভোগ্যপণ্যের কোনটি অপ্রয়োজনীয়, তা সরকার সুনির্দিষ্ট করে দিক। এসব পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে ডলার-সংকট কাটানো যাবে না। তার চেয়ে বিলাসপণ্যে বরং কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা উচিত। আর ডলারের অস্থিরতা না থাকলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিও স্বাভাবিক থাকবে না।

ফারুক আহমেদ কর্ণধার, ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, খাতুনগঞ্জ