শিগগিরই বসবে আরও ২ হাজার ইএফডি মেশিন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
ছবি: সংগৃহীত

ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাটের মেশিন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সারা দেশে ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট পাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় সব মিলিয়ে ভ্যাটের ৭ হাজার ৮০০টি মেশিন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসেছে। শিগগিরই আরও দুই হাজার ইএফডি মেশিন বসবে। ইতিমধ্যে আমদানি হওয়া এসব মেশিন চট্টগ্রাম বন্দরে চলে এসেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তা খালাস শেষ হবে। এরপরই তা বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বসানো শুরু হবে।

যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে থেকে গত ৩ মাসে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়েছে। তাতে গত সেপ্টেম্বরে ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে ৩৭ কোটি টাকা ভ্যাট পেয়েছে ভ্যাট বিভাগ। আগস্ট ও জুলাইয়ে ভ্যাটের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩০ ও ৩৩ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভ্যাট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ইএফডি মেশিন জনপ্রিয় হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে আরও সুবিধা দিলে এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এতে রাজস্ব আদায় বাড়বে। সব ক্ষেত্রে এই মেশিন বসানো হলে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা খাতে বড় পরিবর্তন আসবে।

জানা যায়, ভ্যাট কর্মকর্তারা এখন সনাতনী পদ্ধতিতে ইএফডি মেশিনের বেচাকেনাসহ যাবতীয় বিষয় তদারকি করে থাকে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় গেলে ভ্যাট আদায় আরও বাড়বে বলে মনে করেন ভ্যাট কর্মকর্তারা।

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ভ্যাট আদায় বাড়াতে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো শুরু হয়। করোনার কারণে সেই কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়ে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় আবার ইএফডি মেশিন বসানোয় গতি এসেছে। বর্তমানে সারা দেশে প্রায় তিন লাখ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে। সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে প্রায় তিন লাখ ইএফডি মেশিন বসানোর উদ্যোগও নিয়েছে।

এদিকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসানো ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে কেনাকাটা জনপ্রিয় করতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে নিয়মিত ভ্যাটের লটারি আয়োজন করা হচ্ছে। প্রথম বিজয়ী ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় বিজয়ী ৫০ হাজার এবং তৃতীয় বিজয়ী ৫ জন পাচ্ছেন ২৫ হাজার টাকা করে। বাকি ৯৪ জনের পুরস্কারের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা করে। প্রতি মাসের ৫ তারিখে এই লটারি অনুষ্ঠিত হয়। ইএফডি মেশিন আছে এমন দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনলে সেই কেনাকাটার রসিদ নম্বর দিয়ে লটারি ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তারপর ওই মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর কুপন নম্বর মিলিয়ে দেখাসহ যাচাই–বাছাই করা হবে। আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, সই, ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ থাকতে হবে।