পোশাকশিল্পে ১ জানুয়ারির ধমর্ঘট স্থগিত

শ্রমিক ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন এসএসপির প্রধান সমন্বয়ক এ এ এম ফয়েজ হোসেন। আজ শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় এসএসপির অস্থায়ী কার্যালয়ে
ছবি: এসএসপির সৌজন্যে

সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ (এসএসপি) তৈরি পোশাকশিল্পে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের যে শ্রমিক ধর্মঘট কর্মসূচি ডেকেছিল, তা স্থগিত করেছে সংগঠনটি। পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ ও মজুরি আন্দোলনে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার বিচারসহ সাত দফা দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল এসএসপি।

রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় এসএসপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আজ শুক্রবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক এ এ এম ফয়েজ হোসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এসএসপির নির্বাহী সমন্বয়ক আবদুর রহমান, সমন্বয়ক হারুন অর রশিদ, মোশাররফ হোসেন, বাচ্চু ভূঁইয়া, মীর মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে এ এ এম ফয়েজ হোসেন বলেন, ‘দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে অনিবার্য কারণে ১ জানুয়ারি থেকে ঘোষিত ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। ধর্মঘটের পরবর্তী সময়সূচি পরে জানানো হবে। আমরা আশা করছি, ধর্মঘট শুরুর আগেই সরকার ও মালিকদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হবে।’

সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের (এসএসপি) তথ্যানুযায়ী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১ ডিসেম্বর শ্রমিক সমাবেশে সাত দফা দাবি উত্থাপন করে তারা। সেগুলো হচ্ছে—মজুরি আন্দোলনে শ্রমিক নিহতের ঘটনার বিচার, নিহতদের এক জীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ, পোশাকশ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরি বাতিল করে তা ২৫ হাজার টাকায় নির্ধারণ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, ইপিজেডসহ সর্বত্র ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেওয়া ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলনে এ এ এম ফয়েজ হোসেন জানান, এক মাস হয়ে গেলেও এ বিষয়ে সরকার কোনো সাড়া দেয়নি।

এসএসপির শ্রমিক ধর্মঘটের কর্মসূচির বিষয়টি গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নতুন করে আলোচনায় আসে। সেদিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এসএসপির উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ এ এম ফয়েজ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের দাবি পূরণ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে পোশাকশিল্পে শ্রমিক ধর্মঘট পালন করবেন তাঁরা। ওই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

এদিকে ধমর্ঘট কর্মসূচি স্থগিতের কারণ জানতে চাইলে এ এ এম ফয়েজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাই ধর্মঘট স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি।’