ঈদের আগে শ্রমিকের বেতন-ভাতা দিতে প্রণোদনার টাকা চায় বিকেএমইএ
ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে নগদ সহায়তা বা প্রণোদনার ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় চায় নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ। গত ৩০ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ বিষয়ে আবেদন করেছেন বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান।
একই সঙ্গে চিঠির অনুলিপি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে দেওয়া হয়েছে।
বিকেএমইএর সভাপতি আবেদনে লিখেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। টিকে থাকার সংগ্রাম করছে দেশের শিল্পকারখানা। কঠিন সময় পার করছে রপ্তানি খাত। অধিকাংশ কারখানা ৫০-৬০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে। ফলে রপ্তানি করে মাস শেষে শ্রমিকের বেতনের অর্থসংস্থান করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
আবার যা রপ্তানি হচ্ছে, সেই অর্থ যথাসময়ে পরিশোধ করছে না বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এপ্রিল মাসেই বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের বড় চাপ আছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগের বিশেষ সহায়তা ছাড়া এ চাপ সামলে ওঠা কঠিন হয়ে যাবে।
চলতি অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি খাতের ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা বাবদ বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের প্রথম কিস্তি গত বছরের ২৮ আগস্ট ছাড় করা হয়েছিল ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অক্টোবর-নভেম্বর প্রান্তিকের দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় করা হয় গত ২৭ ডিসেম্বর। যদিও তখন ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার নগদ সহায়তার দাবি জমা ছিল। গত ২৮ মার্চ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের তৃতীয় কিস্তির ২ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়।
এসব বিষয়ে বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, সর্বশেষ যে অর্থ ছাড় করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ঈদের আগে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজন হবে আরও কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা; তা না হলে রপ্তানি খাতে শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হতে পারে।
সে জন্য আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আরও অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা চতুর্থ কিস্তি থেকে ছাড় করার অনুরোধ জানান বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অগ্রিম নয়, আমরা পাওনা অর্থই চতুর্থ কিস্তির বাজেট থেকে চেয়েছি।
ইতিমধ্যে তিন কিস্তিতে মোট ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাজেটে এখনো বরাদ্দ আছে ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকে আমাদের ক্লেইম বা দাবি জমা আছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।’