মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া চিঠিতে যা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা দিয়ে উৎপাদিত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে চিঠি দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।

গতকাল সোমবার পিটার ডি হাসকে এই চিঠি দিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট ও সিনেটর টেড ক্রজকে একই চিঠি দিয়েছেন ফারুক। তিনটি চিঠির কথাগুলো প্রায় হুবহু। আজ মঙ্গলবার চিঠির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

পিটার ডি হাসকে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএর সভাপতি বলেছেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে বৈশ্বিক তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ হিস্যা ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশ ৪ হাজার ৫৭১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তার মধ্যে ৭১ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৩ হাজার ২৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক ছিল কটন বা তুলার তৈরি।

ফারুক হাসান চিঠিতে আরও লিখেছেন, বাংলাদেশে তুলা উৎপাদন সেভাবে হয় না। তৈরি পোশাকের প্রয়োজনীয় ৯৯ শতাংশ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এতে করে তুলা আমদানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ আমদানিকারক হচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশ ৪০৮ কোটি পাউন্ড তুলা আমদানি করেছে। তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই এসেছে প্রায় ৪০ কোটি ৯০ লাখ পাউন্ড। তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য এই তুলা সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়ায় চাষি ও রপ্তানিকারক উভয়ই সুবিধা পায়।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৯৭৪ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। তার মধ্যে ৭১ শতাংশ বা ৬৯১ কোটি ডলারের পোশাকই কটনের তৈরি। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর সারা বিশ্ব থেকে ৪ হাজার ৭৫১ কোটি ডলারের কটন পোশাক আমদানি করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ১৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কটন পোশাকের অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী দেশ।

বিজিএমইএর সভাপতি চিঠিতে লিখেছেন, বাংলাদেশ থেকে গত বছর ৯৭৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের ১৫৫ কোটি ডলারের শুল্ক দিতে হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের গড় শুল্ক গত বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। তার মধ্যে তৈরি পোশাক শুল্ক অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা দিয়ে উৎপাদিত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়ে বিজিএমইএর সভাপতি চিঠিতে লিখেছেন, তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে শীর্ষ রপ্তানিকারক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদেরও বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা দিয়ে তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলে দেশটির (যুক্তরাষ্ট্র) তুলার উৎপাদক ও রপ্তানিকারকেরা ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ কম দামে তৈরি পোশাক কিনতে পারবে।