পাটের বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

পাট খাতের বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে সোনালি আঁশ তথা পাট সোনালি স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

আজ রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জুট প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (জেপিবিপিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘বর্ষ পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এ সম্ভাবনাময় খাতের উন্নয়ন আরও বেগবান করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জুট প্রোডাক্টস বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল গঠন করেছে।

পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, বর্তমানে পাটের উৎপাদন ও পাটপণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। অনেকে পাট ও পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক হাইকমিশনার/রাষ্ট্রদূতকে পাটজাত পণ্য প্রদর্শন এবং বাজার সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে পাট।

দেশে পাটশিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত বহুমুখী পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধিতে জেপিবিপিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রপ্তানির সম্ভাবনাময় খাতগুলোর উন্নয়নে বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) ইতিমধ্যে সাতটি খাতভিত্তিক কাউন্সিল গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মন্ত্রী বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে কেবল ব্যাগের চাহিদা ১০ কোটি থেকে ৭০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে এবং অন্যান্য পাটপণ্যের চাহিদা আছে প্রায় হাজার কোটি টাকার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সূত্রে তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি করে প্রায় ১১৩ কোটি মার্কিন ডলার আয় হয়েছে।

পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পাটের ব্যাগ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পলিথিন ব্যাগের তুলনায় পাটের ব্যাগের দাম বেশি, তবে তা পরিবেশবান্ধব।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিনির দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পরও বাজারে দাম বেশি কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, রমজান শেষের দিকে, সামনে ঈদ। ফলে চিনির চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে দামেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। চিনির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব ও বিজনেস কমিশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তপন কান্তি ঘোষ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জুট প্রোডাক্টস বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিলের সদস্য সংগঠন হিসেবে পাট ও পাটজাত পণ্য খাতসংশ্লিষ্ট আটটি সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।