ঈদের বাজারে কিনতে পারেন এই পাঁচ মোটরসাইকেল

দেশের বাজারে মোটরসাইকেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ঈদ এলে নতুন মোটরসাইকেল বেচাকেনার পরিমাণ বেড়ে যায়। এ সময় মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়।

বর্তমানে দেশে ইয়ামাহা, কেটিএম, হোন্ডা, সুজুকি, বাজাজ, টিভিএস, হিরো ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র বা তাদের অনুমোদিত বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে মিলছে নতুন নতুন মডেলের মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে কিনতে পারেন এমন পাঁচটি ব্র্যান্ডের পাঁচটি মোটরসাইকেলের তথ্য থাকছে এ প্রতিবেদনে।

ইয়ামাহার এফজেড–এক্স

ইয়ামাহার এফজেড–এক্স

কয়েক মাস আগে বাজারে এসেছে জাপানি ব্র্যান্ড ইয়ামাহার ১৪৯ সিসি ইঞ্জিনক্ষমতার এফজেড–এক্স মোটরসাইকেল। ইয়ামাহার দেশীয় একমাত্র পরিবেশক ও যৌথ কারিগরি সহযোগী এসিআই মোটরস। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, দেখতে স্টাইলিশ, উচ্চ ক্ষমতা, স্মুথনেস, ভালো ভারসাম্য এবং বড় ও আরামদায়ক সিটের জন্য ইতিমধ্যে মোটরসাইকেলটি বাইকপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সম্প্রতি আরমাডা ব্লু কালারের ইয়ামাহা এফজেড–এক্স বাজারে এসেছে।  

পাঁচ গিয়ারের এই মোটরসাইকেল প্রতি লিটার জ্বালানি খরচে ৪৫ কিলোমিটার পথ (মাইলেজ) পাড়ি দিতে সক্ষম। যদিও বাইকচালক, বাইকের অবস্থা ও রাস্তার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে মাইলেজ কমবেশি হতে পারে। বাইকটির ফুয়েল ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ১০ লিটার।

পাশাপাশি বাইকের সামনে রয়েছে টেলিস্কপিক ফর্ক এবং পেছনে অ্যাডজাস্টেবল মনোক্রস সাসপেনশন। এ ছাড়া দুই চাকাতেই ডিস্ক ব্রেকের সঙ্গে মিলবে সিঙ্গেল চ্যানেল অ্যান্টি লক ব্রেকিং পদ্ধতি। এ ছাড়া চার ভালভসমৃদ্ধ মোটরসাইকেলটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলতে পারে।

ইয়ামাহার এফজেড–এক্স মোটরসাইকেলটির বাজারমূল্য ৩ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা। তবে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ে ৩ লাখ ৮০০ টাকায় এটি বিক্রি হচ্ছে।

বাজাজের পালসার এন২৫০

বাজাজের পালসার এন২৫০

বাংলাদেশে ভারতীয় বাজাজ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাজারজাত করে উত্তরা মোটরস। বর্তমানে বাজাজের পালসার, ডিসকভার, প্লাটিনা ও সিটি মডেলের বেশ কিছু মোটরসাইকেল রয়েছে। এর মধ্যে নতুন এসেছে পালসার এন২৫০ মোটরসাইকেলটি। গত বছরের নভেম্বরে দেশের বাজারে আসে ২৫০ সিসি ইঞ্জিনক্ষমতার বাইকটি।

বাজাজের কর্মকর্তারা জানান, দেশের বাজারে ২৫০ সিসির প্রথম মোটরসাইকেল হিসেবে পালসার এন২৫০ বাজারজাত করা হয়েছে। স্পোর্টিং ধরনের এই মোটরসাইকেল মোটরসাইকেলপ্রেমীদের চাহিদা ও শহরের দৈনন্দিন পরিস্থিতিতে চালানোর উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।

বাজাজ পালসার এন২৫০ মোটরসাইকেলটিতে রয়েছে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস প্রযুক্তি। মোটরসাইকেলটির সামনে ৩৭ মিলিমিটারের টেলিস্কোপিক সাসপেনশন ও পেছনে রয়েছে মনোশক সাসপেনশন। মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিনটি ফোর স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ধরনের।

মোট ১৪ লিটার ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটির বাইকটির ওজন ১৬২ কেজি। মোটরসাইকেলটিতে ৪৫ কিলোমিটারের মতো মাইলেজ পাওয়া যায়। বাজাজ পালসার এন২৫০ মোটরসাইকেলের দাম ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯৯ টাকা।

কেটিএম ডিউক ১২৫

কেটিএম ডিউক ১২৫

দেশে কেটিএম ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাজারজাত করছে রানার অটোমোবাইলস। রেসিং ধরনের মোটরসাইকেলের জন্য অস্ট্রিয়ান ব্র্যান্ড কেটিএম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশি মোটরসাইকেলপ্রেমীদের কাছেও বেশ পছন্দের।

বর্তমানে কেটিএম ডিউক ১২৫ মডেলের বাইকটি সবচেয়ে দামি। এটির দুটি ধরন আছে। এর মধ্যে কেটিএম ডিউক ১২৫–এর ভারতীয় ভার্সনের দাম ৪ লাখ ৮ হাজার টাকা; আর ইউরোপীয় ভার্সনের দাম ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা। তবে ঈদ উপলক্ষে উভয় বাইকে থাকছে ৭৩ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক। এই অফার চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত।

১২৫ সিসির স্ট্রিট রেসিং ধরনের এই মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকের ধারণক্ষমতা সাড়ে ১৩ লিটার। মোটরসাইকেলটিতে গড়ে ৪২ কিলোমিটার মাইলেজ পাওয়া যায়।  

হোন্ডার এক্স-ব্লেড

হোন্ডার এক্স-ব্লেড

এবারের ঈদবাজারে জাপানি কোম্পানি হোন্ডার এক্স-ব্লেড মোটরসাইকেলের বেশ চাহিদা রয়েছে বলে জানান এটির বাজারজাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। ১৬২ সিসির ও পাঁচ গিয়ারের হোন্ডা এক্স-ব্লেড মোটরসাইকেলটি কমিউটার ধরনের। হোন্ডার কর্মকর্তারা জানান, মোটরসাইকেলটির ডিজাইন, পারফরম্যান্স, গতি ও মাইলেজ—সবই অসাধারণ।

হোন্ডা এক্স-ব্লেডে রয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার ও অ্যান্টি-লক ব্রেকিং পদ্ধতি (এবিএস)। এ ছাড়া রয়েছে সামনে ২৭৬ মিলিমিটার ও পেছনে ২২০ মিলিমিটার ডিস্ক ব্রেক; যার ফলে ব্রেক করার সময় ভালো নিয়ন্ত্রণ থাকে। মোটরবাইকটিতে সর্বোচ্চ ৪৫–৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পাওয়া যায়; আর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার।

বর্তমানে বিক্রয়কেন্দ্রভেদে তিন থেকে চারটি রঙে পাওয়া যাচ্ছে এক্স-ব্লেড। সিঙ্গেল ডিস্ক এক্স-ব্লেডের দাম ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আর এক্স-ব্লেডের ডাবল ডিস্ক এবিএস মোটরসাইকেলের দাম ২ লাখ ২২ হাজার টাকা।

সুজুকির জিক্সার এফআই এবিএস

সুজুকির জিক্সার এফআই এবিএস

জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি সুজুকি মোটরসের রয়েছে বেশ কিছু ভালো মানের ও বৈচিত্র্যময় মোটরসাইকেল। দেশে সুজুকির মোটরসাইকেল বাজারজাত করছে র‌্যানকন মোটরবাইক লিমিটেড।

এবারের ঈদে সুজুকির বেশ কিছু মোটরসাইকেলে মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। দেশের বাজারে সুজুকির দামি মোটরসাইকেলগুলোর একটি হলো সুজুকি জিক্সার এফআই এবিএস মডেলের বাইকটি। ১৫৫ সিসির মোটরসাইকেলটিতে পাঁচ গিয়ার ও ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক রয়েছে। সুজুকি জিক্সার এফআই বাইকে গড়ে ৬৪ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পাওয়া যায়; আর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।

সুজুকি জিক্সার এফআইতে টিউবলেস টায়ারসহ রয়েছে একক চ্যানেল অ্যান্টি-লক ব্রেকিং পদ্ধতি (এবিএস)। তাতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাড়তি সুবিধা হয়। পাশাপাশি এর এলইডি হেডলাইট ও টেইল-ল্যাম্প বাইকটিকে দিচ্ছে বিশেষ লুক। মোটরসাইকেলটির দাম ২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫০ টাকা। তবে ঈদ উপলক্ষে বাইকটিতে ৮ হাজার টাকা মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে।