অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামে আমদানিনির্ভরতা কমাতে চান ব্যবসায়ীরা

এফবিসিসিআইছবি: সংগৃহীত

দেশে যেসব অগ্নিনির্বাপণ ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার হয়, তার প্রায় শতভাগই আমদানিনির্ভর। এই আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশেই গুণগত মানের অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরি করা সম্ভব। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইলেকট্রনিকস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন (ইসাব)।

রাজধানীর মতিঝিলে আজ শনিবার ‘ফায়ার সেফটি চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড মিটিগেশন স্ট্র্যাটেজিস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সেখানে অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জামের আমদানিনির্ভরতা কমানো নিয়ে কথা বলেন ইসাব সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক মো. নিয়াজ আলী চিশতি।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা স্থপতি ইকবাল হাবিব, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী, মো. মুনির হোসেন, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ প্রমুখ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও ভবন নির্মাণ নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণের বিকল্প নেই। রাজধানীতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ, শিল্পকারখানা স্থাপন ও নগরায়ণের ক্ষেত্রে সরকার প্রণীত বিধিবিধান ও আইন যথাযথ প্রয়োগ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের তৎপরতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সারা দেশে খাল, বিল, নদী ও পুকুর দখলমুক্ত করার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সরকার প্রয়োজনে আরও কঠোর হবে। আমরা সবাই একটি বসবাসযোগ্য ও স্মার্ট ঢাকা গড়ে তুলতে চাই।’

দক্ষ ফায়ার ফাইটার ও স্বেচ্ছাসেবী তৈরিতে একটি ফায়ার একাডেমি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, একাডেমির জন্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলছে। পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স ও স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।

অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে শিল্প এলাকাগুলোতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।
এ ছাড়া সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের বাইরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ কর্মপরিবেশ বাস্তবায়নে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এফবিসিসিআইয়ের সেফটি কাউন্সিল কার্যক্রম শুরু করেছে। এর আওতায় তৈরি পোশাক খাত ব্যতীত প্রায় ১ হাজার ২০০ শিল্পকারখানা ও ১৭২টি মার্কেট পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, ১৪০ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি এবং ১৬টি বিভাগীয় চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনে সেফটি সেল স্থাপন করা হয়েছে।