জুনে চালু হবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল

ফাইল ছবি

বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে চালু হতে পারে। আগামী পাঁচ থেকে সাত জুনের যেকোনো দিন এই টার্মিনালে জাহাজ ভেড়ানোর সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ডেনমার্কভিত্তিক জাহাজ কোম্পানি মায়ের্সক লাইনের জাহাজ দিয়ে এই টার্মিনালের পথচলা শুরু হবে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে।

কনটেইনার টার্মিনালে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার জাহাজে বোঝাই করা হয়। আবার আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর পর তা থেকে কনটেইনার খালাস করা হয়। নতুন এই টার্মিনাল চালু হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে আরও গতি আসবে।

বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই টার্মিনাল দীর্ঘ মেয়াদে পরিচালনার জন্য সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য গত বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবার কোনো বিদেশি কোম্পানি বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনা করতে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুনের প্রথম সপ্তাহে টার্মিনালটি চালুর সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, প্রথম সপ্তাহে টার্মিনালটিতে জাহাজ ভেড়ানো হতে পারে।’

মূলত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় সৌদির প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, সরবরাহ, পরিচালনা ও হস্তান্তর ভিত্তিতে ২২ বছর মেয়াদে টার্মিনালটি পরিচালনা করবে সৌদি কোম্পানিটি। চুক্তির পর তারা এককালীন ও বার্ষিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করবে বন্দরকে। এ ছাড়া সৌদি কোম্পানি কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য শিপিং কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে ফি পাবে, তা থেকে কনটেইনারপ্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বন্দরকে দেওয়ার কথা।

রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল সূত্রে জানা গেছে, চুক্তির পর সৌদি প্রতিষ্ঠানটি যন্ত্রপাতি সংগ্রহ শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত টার্মিনালটিতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর ১৩টি যন্ত্র সংযোজন করা হয়েছে। তবে মূল যন্ত্রপাতি অর্থাৎ জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হতে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময় লাগবে। মূল যন্ত্র সংগ্রহের আগে জাহাজের ক্রেন দিয়ে কনটেইনার নামানো ও ওঠানো হবে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চুক্তির পর ১৭ এপ্রিল পতেঙ্গা টার্মিনালের ৩২ একর ও টার্মিনালের সম্প্রসারিত অংশ সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ডের ১৬ একর জায়গা বন্ডেড এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। অর্থাৎ এই এলাকায় পণ্য সংরক্ষাণাগার ও পণ্যের নিরাপত্তা বিধান করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এ এলাকা।

বন্দরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বন্ডেড এরিয়া হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল বন্ড লাইসেন্সের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করতে পারবে।

চট্টগ্রাম বন্দরে এখন তিনটি টার্মিনাল রয়েছে। জিসিবি, সিসিটি ও এনসিটি—এই তিন টার্মিনালে এত দিন কনটেইনার ওঠানো–নামানো হতো। নতুন করে পতেঙ্গা টার্মিনাল চালু হলে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর সক্ষমতা বাড়বে বন্দরের।