তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডে ১১১ পোশাকশ্রমিকের প্রাণহানির পেছনে মালিকপক্ষের চরম গাফিলতি ছিল। আগুন লাগার পরপরই কারখানার তৃতীয় তলার ফটভকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
ওই ঘটনার ১০ বছর পূর্তি হতে চললেও বিচার শেষ হয়নি। মূল আসামি তাজরীনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে জামিনে আছেন। গত মে মাসে ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ বৃহস্পতিবার তাজরীন ট্র্যাজেডির ১০ বছর পূর্তি হচ্ছে। তার আগে গতকাল বুধবার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাজরীন ফ্যাশনসের ঘটনায় দ্রুত বিচার সম্পন্ন, নিহত শ্রমিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়েছে। ২০১২ সালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনা ঘটে।
তাজরীন ফ্যাশনসের পুড়ে যাওয়া ভবনটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। সেই ভবনের প্রধান ফটকে গতকাল আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান শ্রমিকনেতা তাসলিমা আখ্তার, তাজরীনের ঘটনায় নিহত শাহ আলমের মা সাহারা খাতুন, নিহত শ্রমিক মাহফুজা আক্তারের স্বামী জব্বার, নিহত লিপির মা নসীমন, নিহত আইনালের মা জবেদা, আহত শ্রমিক নাসিমা আক্তার প্রমুখ। এর আগের তিন দিন ঢাকায় পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে ওই প্রদর্শনী হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ১০ বছর পার হলেও মামলায় দীর্ঘসূত্রতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে আজও তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ী দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যদের বিচার হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের যথাযথ পুনর্বাসনও করা হয়নি। এমনকি কর্মক্ষেত্রের দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আইনও বদল হয়নি।
এদিকে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান এক বিবৃতিতে অবিলম্বে তাজরীনের ঘটনার বিচার, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা বিচারহীনতার নামান্তর। সরকারপক্ষ তাজরীন ফ্যাশনসের মালিকসহ অপরাধীদের রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।