সবার আগে বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক করার পদক্ষেপ দরকার

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট থেকে স্থানীয়ভাবে কী প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা জানতে ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ী নেতাদের অভিমত প্রকাশ করছে প্রথম আলো।

মো. জহিরুল হক, পরিচালক (বিপণন), ফরিদ গ্রুপছবি: প্রথম আলো

মো. জহিরুল হক কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর জাল ও সুতা তৈরির কারখানা ফরিদ গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) ও কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য। প্রথম আলোর কাছে জানিয়েছেন আগামী বাজেটে তাঁর প্রত্যাশার কথা।

বাজেট ২০২৩–২৪
লোগো: প্রথম আলো

ভৌগোলিকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে কুমিল্লার অবস্থান। এখানে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) আছে। বিসিক শিল্পনগরী আছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বহু শিল্পকারখানা আছে। তবে কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে জলাবদ্ধতা আছে। তাই এ সমস্যা সমাধানে নালা ও সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ রাখতে হবে। বিসিকের পরিবেশ উন্নত হলে কর্মসংস্থান বাড়বে। ব্যবসায়ীরা সুবিধা পাবেন। আঞ্চলিক ক্ষেত্রে কুমিল্লার সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য মেগা প্রকল্পের অর্থ সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে।

বর্তমানে বাজারে দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। করোনাভাইরাস মহামারির পর বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে, ডলারের দাম বেড়েছে। আবার ডলার–সংকটও হয়েছে। সব মিলিয়ে মানুষ স্বস্তিতে নেই। কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হবে।

আমি মনে করি, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের স্বার্থ দেখতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, গ্যাস, ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজসহ সব ধরনের মসলার দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজেট যেন ধনীকে আরও ধনী এবং গরিবকে আরও গরিব না করে। সবার মধ্যে মোটামুটি ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। সমষ্টির দিকে লক্ষ রেখে বাজেট দিতে হবে।

দেশের একেক জেলার একেক সমস্যা। প্রয়োজনে জেলা উন্নয়ন বাজেট দেওয়া যেতে পারে। কুমিল্লা বড় জেলা। সব মিলিয়ে ১৭টি উপজেলা রয়েছে এই জেলায়। সারা দেশের মধ্যে কুমিল্লার লোক বেশিসংখ্যক বিদেশে থাকেন। এখানে বৈদেশিক মুদ্রা বেশি আসে। এতে কিছু মানুষের সুবিধা হলেও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ ভালো নেই। যারা বেতনের ওপর নির্ভরশীল, সেই সব পরিবার ঠিকমতো চলতে পারছে না।

কুমিল্লা ধান ও মাছ উৎপাদনে ভালো করছে। কিন্তু মাছের খাবারের দাম বেড়েছে, বেড়েছে ধান উৎপাদনের খরচও। এগুলো সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বাজেটে নিতে হবে। এ জন্য নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে। বাজেটে আমার মূল প্রত্যাশা, সবার আগে বাজারদর এবং বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

অনুলিখন: গাজীউল হক, কুমিল্লা