বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য মন্ত্রী

অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালীকরণবিষয়ক সভায় অতিথিরা। আজ বুধবার সিডনির একটি পাঁচ তারকা হোটেলেছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ক্ষুদ্র বাণিজ্য ও বহু সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী স্টিফেন ক্যাম্পার। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালীকরণবিষয়ক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আজ বুধবার সিডনির একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সকালে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক ছিল ক্যানবেরার বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং সিডনির বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) একটি প্রতিনিধিদলের অস্ট্রেলিয়া সফরের কার্যক্রম হিসেবে এ সভার আয়োজন করা হয়।

প্রতিনিধিদলটির পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা এতে অংশ নেন। বাংলাদেশের বাণিজ্য খাতে সাম্প্রতিক অর্জন, পোশাক, প্লাস্টিক, পাট ও ওষুধ রপ্তানির বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ও তথ্যবহুল প্রতিবেদন তুলে ধরেন সফররত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধির সুযোগ আছে বলে হাইকমিশনার বৈঠকে জানান।

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ক্ষুদ্র বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী স্টিফেন ক্যাম্পার বলেন, তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ভালো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এখনো যথেষ্ট নয়।

বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের প্রধান ও এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প কারখানা বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদনে আরও এগিয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। বাণিজ্যের পাশাপাশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতেও আমরা অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা আশা করছি।’

বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে দুই দেশের মধ্যে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) বা একটি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি (আরটিএ) করার প্রস্তাব দেন যশোদা জীবন দেবনাথ। তিনি চট্টগ্রাম ও সিডনির মধ্যে সরাসরি শিপিং রুট চালুরও আহ্বান জানান।

সভায় আরও বক্তব্য দেন রাজ্যের শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী সোফি কটিস, পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগের সহকারী সচিব ব্রুস সোয়ার এবং ফ্যাশন কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানা কোয়াইনটেন্স। বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. সাখাওয়াত হোসেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এফবিসিসিআই সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে বছরে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয় অস্ট্রেলিয়ায়। গত দুই বছরে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩ শতাংশের মতো। অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ৯১ শতাংশ রপ্তানি তৈরি পোশাক খাতের। তবে কৃষি, সামুদ্রিক খাবার, চামড়া, প্লাস্টিক পণ্য, পাটজাত পণ্য, ওষুধ, টাইলস, সেবা ও আইটি খাতে রপ্তানি আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। বছরে অন্তত ৮০০ কোটি ডলারের রপ্তানির সম্ভবনা আছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে চীন ও ভারতের মতো দেশের আধিপত্য রয়েছে।