মুনাফা কমিয়ে মানসম্মত পণ্য দিচ্ছি গ্রাহকদের

তোফায়েল আহমেদ প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা (সিবিও), ওয়ালটন
প্রশ্ন:

প্রথম আলো: কোরবানি ঈদের মৌসুমে ফ্রিজের চাহিদা কেমন বাড়ছে? বিক্রি নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা কেমন?

তোফায়েল আহমেদ: ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদটা আমাদের জন্য বিশেষ উপলক্ষ। কারণ, এ সময়ে বাজারে ফ্রিজের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। বিশেষ করে ফ্রিজারের (ডিপ ফ্রিজ) চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। বছরের দুই ঈদে মোট বিক্রির ৬০ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্য থাকে আমাদের। এই ঈদের মৌসুমেও গ্রাহকদের থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, আমরা লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: নতুন কোন ধরনের ফ্রিজ ঈদ মৌসুমে বাজারে এনেছেন?

তোফায়েল আহমেদ: সম্প্রতি ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর জায়ানটেক নামে নতুন সিরিজের ফ্রিজ বাজারে এনেছি আমরা। এই সিরিজের ৬৪৬ লিটারের ফ্রিজটি হচ্ছে বিশ্বের প্রথম এইট ইন ওয়ান কনভার্টেবল সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর। এতে আরও রয়েছে ওয়াটার ডিসপেনসার, আইওটিসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। আইওটি ফিচারসম্পন্ন রেফ্রিজারেটর বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে মুঠোফোন অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ৬৬০ লিটারের ফ্রেঞ্চ-ডোর ফ্রিজেও রয়েছে আধুনিক সব ফিচার। এ ছাড়া ভার্টিক্যাল ও কনভার্টেবল ডিপ ফ্রিজারসহ একাধিক মডেলের ফ্রিজের সরবরাহ রয়েছে।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: দেশে ফ্রিজের বাজার কত বড়?

তোফায়েল আহমেদ: সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে ফ্রিজের বাজার কিছুটা সংকুচিত হয়েছে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে ফ্রিজের চাহিদা প্রায় ৩০ লাখের মতো। টাকার অঙ্কে তা ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। দেশের রেফ্রিজারেটরের চাহিদার সিংহভাগই ওয়ালটন পূরণ করছে। আমাদের হিসেবে দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের ঘরে ওয়ালটনের ফ্রিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্রাহকদের আস্থার কারণে আমরা নবমবারের মতো ফ্রিজ বিক্রিতে দেশসেরা ব্র্যান্ড হয়েছি।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই খাতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে?

তোফায়েল আহমেদ: গত এক বছরে চলমান ডলার–সংকটের কারণে শুধু ফ্রিজের বাজার নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে গত অর্থবছর আমাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ, সব ধরনের ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ফলে কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যায়ে তার প্রভাব পড়ে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা পণ্যের গুণগত মানে আপস করিনি; বরং মুনাফা কমিয়ে গ্রাহকদের হাতে মানসম্মত পণ্য তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গ্রাহকদের জন্য পণ্যের মূল্য কীভাবে আরও সহনশীল পর্যায়ে রাখা যায়, বর্তমানে আমরা সেই চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: ফ্রিজের দাম কেমন বেড়েছে?

তোফায়েল আহমেদ: গত বছর ডলারের দাম প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে আমরা গত পাঁচ মাসে পণ্যের দাম বাড়াইনি। ঈদ উপলক্ষে কিছু জনপ্রিয় মডেলের দাম কমানো হয়েছে।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: ফ্রিজের দরদাম ও অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কে পাঠকদের কিছু জানান।

তোফায়েল আহমেদ: গ্রাহকেরা বর্তমানে ১৪ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৯০ টাকায় আমাদের ফ্রিজগুলো কিনতে পারছেন। ওয়ালটনের ফ্রিজে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্টের পাশাপাশি কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি পাবেন গ্রাহকেরা। সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে আমরা গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছি। দেশজুড়ে আমাদের রয়েছে ৭৯টি আইএসও স্ট্যান্ডার্ড পরিষেবা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে ১ হাজারের বেশি দক্ষ কর্মী সেবা দিয়ে থাকেন।