প্রথমবারের মতো রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা। করোনা–পরবর্তী সময়ে দেশের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে এই মেলার আয়োজন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। আয়োজকদের মতে, প্রথমবারের মতো আয়োজিত মেলায় ভালো সাড়া মিলেছে। এতে তিন দিনব্যাপী মেলায় বুকিংসহ ১০০ কোটির মতো ব্যবসা হয়েছে।

গতকাল শনিবার শেষ দিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, দিনভর মেলা প্রাঙ্গণে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থীরা দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে ভ্রমণের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করেন। মেলায় দেশি-বিদেশি ৯০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ভালো ব্যবসা করেছে বলে জানান আয়োজকেরা।

আটাব মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের এই আয়োজনে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এতে ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি। আমরাও প্রথমবারের মতো এমন আয়োজন সফলভাবে করতে পেরে আগের থেকে বেশি আত্মবিশ্বাসী। এক ছাদের নিচে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থাকায় দর্শনার্থীদের জন্য সুবিধা হয়েছে।’

তিন দিনব্যাপী পর্যটন মেলার শেষদিনে দর্শনার্থীদের ভিড়। আজ শনিবার শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।
ছবি: প্রথম আলো

তিন দিনে কত টাকার ব্যবসা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুস সালাম আরেফ বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তাতে বুকিংসহ নগদ লেনদেনের পরিমাণ ১০০ কোটির মতো হয়েছে। প্রথমবারের আয়োজনে যে ব্যবসা হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করতেই হবে। মানুষ নানা চাপের মধ্যেই ঘুরতে চাচ্ছেন, এটা ইতিবাচক বিষয়। আমরাও দেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

পর্যটন মেলায় বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর স্টলে বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, নভোএয়ার ও সদ্য বাজারে আসা এয়ার অ্যাস্ট্রার স্টলে ছিল বেশি ভিড়। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের স্টলেও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মেলায় ভ্রমণ, ভিসাসহ বিভিন্ন রিসোর্ট ও ভ্রমণ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশ নেয় অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রদানকারী শেয়ার ট্রিপ, ফ্লাইট এক্সপার্ট ও ট্রাভেল চ্যাম্পের মতো প্রতিষ্ঠান।

এসব প্রতিষ্ঠান মেলা উপলক্ষে ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রির জন্য উপস্থাপন করে। এ সুযোগ লুফে নেন মেলায় আসা বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।

বেসরকারি চাকরিজীবী নিশাত তাসনীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বছর শেষে দেশের বাইরে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা থাকে। মেলায় এসেছিলাম বিদেশ ভ্রমণের ভালো একটি প্যাকেজ খুঁজতে। তুরস্কের জন্য একটা প্যাকেজ বুকিংও করেছি। আশা করছি ভালো সেবা পাব।’

মেলায় অংশগ্রহণকারী অনেকের মধ্যে দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানকে মেলায় অংশ নিতে দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। অনেকে বলেছেন, দেশে এখন ডলারের সংকট চলছে। এখন মানুষকে দেশের বাইরে ভ্রমণের জন্য উৎসাহ না দিয়ে দেশের ভেতরে ঘোরাঘুরিতে আগ্রহী করে তোলা উচিত। সেটি হলে অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।

আয়োজকদের দাবি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুযোগ করে দিলে সেসব দেশের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। বিদেশি পর্যটকেরাও আগ্রহ পান। তাতে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটা পথও তৈরি হবে বলে আশা তাঁদের।